আখাউড়ায় শিল্প পার্ক করার পরিকল্পনা নিয়েছি-আইনমন্ত্রী

টিআইএন॥ প্রথিতযশা আইনজীবী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লিগের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রয়াত জনাব এডভোকেট সিরাজুল হক বাচ্চু মিয়া সাহের সুযোগ্য উত্তরসূরী জনাব এডভোকেট আনিসুল হক ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারে তিনি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব তিনি সফলভাবে পালন করে চলেছেন। একই সঙ্গে তাঁর হাত ধরে এলাকায় হয়েছে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন। আগামীতে আখাউড়া ও কসবায় পৃথক দুটি শিল্পাঞ্চল ও রপ্তানি এলাকা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। এলাকার উন্নয়ন ও পরিকল্পনার কথা সাংবাদিকদের বলেছেন। industrial park in akhwara
এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, ‘আখাউড়া দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর। এটির উন্নয়নে আখাউড়া থেকে আগরতলা পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্থাপন করতে চাই। এরই ধারাবাহিকতায় রপ্তানিযোগ্য শিল্প-কারখানা করার জন্য একটি রপ্তানি এলাকা করার পরিকল্পনা রয়েছে। অর্থাৎ একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক করতে চাই এই এলাকায়। যাতে করে এখান থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে রপ্তানি কার্যক্রম দ্রুততর সময়ে করা সম্ভব হয়।’
মাননীয় আইনমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে আখাউড়া ও কসবার সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। একজন বীরশ্রেষ্ঠ’র সমাধি রয়েছে এখানে। এটিকে ঐতিহাসিক পর্যটন এলাকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। কসবায়ও একটি শিল্প পার্ক করতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘কসবা-আখাউড়া এলাকার রাস্তাঘাটের অনেক উন্নয়ন করেছি। আরো উন্নয়নের পদক্ষেপ নিয়েছি। কসবার সঙ্গে কুমিল্লার বুড়িচং, শশীতল ও রাজাপুর দিয়ে একটি সড়ক রয়েছে। কসবার সৈয়দাবাদে এসে সড়কটি মিলেছে। এই সড়ক ধরেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাওয়া যায়। এই সড়ক দিয়ে চট্টগ্রামে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হলে আমাদের আর কুমিল্লার ময়নামতী হয়ে চট্টগ্রামে যাতায়াত করতে হবে না। রাস্তাটি হয়ে গেলে সড়কপথে সিলেট-চট্টগ্রামের দূরত্বও অনেক কমে আসবে।’
আর এক প্রশ্নের জবাবে মাননীয় মন্ত্রী বলেন, ‘আমার এই রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ জনকল্যাণের জন্য। আগের সরকারগুলোর কথা বলব না; ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠনের পর দেশের উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট অর্থ বরাদ্দ করেছেন এবং অন্যান্য উপকরণ দিয়েছেন; কিন্তু কসবা-আখাউড়ায় এসে দেখলাম সেই টাকা ও উপকরণগুলোর সদ্ব্যবহার করা হয়নি। টাকাটা জনগণের কাজে ব্যবহার হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই কসবা-আখাউড়ার উন্নয়ন সেভাবে হয়নি।’
জনাব আনিসুল হক বলেন, ‘আমি প্রথমেই জানার চেষ্টা করেছি কসবা-আখাউড়ার মানুষের মৌলিক চাহিদা কী? তাদের প্রথম চাহিদা হচ্ছে যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হওয়া। দ্বিতীয় চাহিদা হচ্ছে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। চার বছরে সরকারি দপ্তরে প্রায় ৮০০ জনকে চাকরি দিতে পেরেছি। কসবা-আখাউড়ায় প্রায় ৫০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছি। আর আগের সময়গুলোতে এখানে দুর্নীতি হয়েছে।’
এই নিলোভ ও নিরহংকার জনপ্রতিনিধি বলেন, ‘জনগণের কাজ করার পাশাপাশি আমি এলাকায় দলকে সংগঠিত করছি। আমরা প্রতিনিয়ত জঙ্গিবাদের হুমকির মধ্যে থাকি। সেটা নির্মূল করতে আমাদের দল কাজ করে যাচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত যেহেতু বাংলাদেশে বিশ্বাস করে না সেহেতু তারা যেকোনো নাশকতামূলক কাজ করতে পিছপা হবে না। এসব বিষয় মাথায় রেখেই আমরা এবং আমাদের দল কাজ করে যাচ্ছে। একই সঙ্গে ২০১৯ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
জনাব আনিসুল হক আরও বলেন, ‘কসবা-আখাউড়ার প্রধান সড়কগুলোর উন্নয়ন হয়ে গেছে। এখন মোটা দাগে তেমন কাজ নেই। তবে গ্রামগঞ্জে যেসব রাস্তাঘাট এখনো পাকা হয়নি সেগুলো দ্রুত পাকা করা, এই দুই উপজেলায় পরিকল্পিত উন্নয়ন করা, তিতাস নদী খনন করে এর নাব্যতা ফিরিয়ে আনাই এখন প্রধান কাজ।’ তিনি বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকায় বেকারদের কর্মসংস্থান হলে এলাকায় সব রকম অপরাধ কর্মকান্ড কমে যাবে। মাদক একটা বড় সমস্যা। বিশেষ করে আখাউড়া এলাকায়। এটা যাতে পুরোপুরি বন্ধ করা যায় সেই চেষ্টা করছি।’
সবশেষে আনিসুল হক বলেন, ‘দীর্ঘ ৬৬ বছর পর এবারই শেখ হাসিনার সরকারের আমলে কসবা-আখাউড়ার মানুষ মন্ত্রী পেয়েছে। এলাকার মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ দেওয়ায় আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কৃতজ্ঞ। আর আমি মন্ত্রী হয়ে সুযোগটুকু কাজে লাগিয়েছি এলাকার উন্নয়নে।’
তথ্য সুত্র: কালের কন্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published.