চার বছরে আখাউড়া-কসবায় ৫০০ কোটি টাকার উন্নয়ন…আনিছূল হক

রাইসলাম॥ গত শুক্রবার ২৩ ফেব্রুয়ারী আইন বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক এমপি আখাউড়ায় এই কথা বলেন। বিকাল ৩টায় মন্ত্রী ধরখার ইউনিয়নের বনগজে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের সংযোগ ব্রীজ ও ধরখার থানা ফাড়ি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনসহ গুলখারের একটি রাজনৈতিক জনসভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে এই উন্নয়ন ফিরিস্তি তুলে ধরেন।  500 crour taka work in kasba akhora
সরেজমিন আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানাগেছে গত চার বছরে আখাউড়া ও কসবা উপজেলায় প্রায় ৫০০ কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে। ২০১৪ সালের আগ পর্যন্ত স্বাধীনতার আগে ও পরে মিলিয়ে ৬৬ বছরেও এতো উন্নয়ন হয়নি যা গত চার বছরে হয়েছে। অনেক দিন পর এলাকার সাধারন মানুষ উন্নয়ন চোখে দেখছে। আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও যুবলীগের আহবায়ক তাকজিল খলিফা কাজল বলেছেন, জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকা কসবা ও আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪) আসনে আগে কাউকে মন্ত্রী করা হয়নি তাই উন্নয়ন বঞ্চিত ছিল। অবহেলিত এই আসনে এ্যাডভোকেট আনিসুল হক বিজয়ী হয়ে আইনমন্ত্রী হওয়ার পর দেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় দুই উপজেলার ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্রধান কৌঁসলি এবং কসবা-আখাউড়ার সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম সিরাজুল হক বাচ্চু মিয়া সাহেবের ছেলে এ্যাডভোকেট আনিসুল হকের হাত ধরেই কসবা-আখাউড়ায় উন্নয়নের জোয়ার বইছে এখন। বিগত চার বছরে অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। রাস্তাঘাটের পাশাপাশি এই দুই উপজেলার শতভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুতের আলো পৌছে গেছে। মন্ত্রীমহোদয়ের হাত ধরে চাকুরী হয়েছে প্রায় ৮০০ বেকার যুবক ও যুবতিদের। উন্নয়নের ব্যাপকতায় মুগ্ধ হয়ে সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে সকল শ্রেনীর মানুষ মন্ত্রীমহোদয়কে কাছে টেনে নিয়েছে।
সরেজমিন খোজ নেয়ার সময় ধরখার ইউনিয়নের স্থানীয় অনেক মানুষের বক্তব্যে এসেছে মন্ত্রীমহোদয় স্বচ্ছ, আদর্শ ও সুন্দর মনের একজন মানুষ। আমাদের জন্য আশীর্বাদ স্বরুপ। কসবা-আখাউড়ার বিভিন্ন এলাকায় খোজ নেয়ার সময় সাধারন মানুষ বলেছেন, দেশ স্বাধীনের পর ২০১৪ সাল পর্যন্ত গত প্রায় ৪৩ বছর এলাকার উন্নয়ন ছিল না। বিভিন্ন সময়ে সরকারি দল থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও এলাকার উন্নয়নে তেমন মনোযোগী ছিলনা, ক্ষমতাও তাদের সিমিত ছিল। এমপিরা তখন ব্যস্ত ছিলেন নিজেদের ১০%, ১৫% কমিশন নিয়ে। আবার তাদের পরিবারের সদস্যদের ও নিজেদের অনুসারী ঘনিষ্ঠদের উন্নয়নে কাজ করেছেন। ফলে সরকারি বরাদ্দ এলেও এলাকার মানুষ উন্নয়নবঞ্চিত হয়েছে।
এদিকে সম্প্রতি সরেজমিন খোজ নেয়ার সময় দেখাগেছে, গত চার বছরে কসবা ও আখাউড়ায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আখাউড়া মোগড়া থেকে সরাসরি যোগাযোগের জন্য কসবা পর্যন্ত নির্মাণ করা হয় ১৭ কিলোমিটার পাকা রাস্তা। আগে এই রাস্তাটি থাকলেও যাতায়াতের সুবিধা ছিল না। একইভাবে কুটি চৌমুহনী থেকে কসবা রেল স্টেশন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণ ও প্রশস্ত করা হয়েছে আইনমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে। কসবা উপজেলা সদরের মাঝ দিয়ে বহমান একটি খাল উপজেলা সদরকে দুই ভাগ করে রেখেছিল বছরের পর বছর। আনিসুল হক আইনমন্ত্রী হওয়ার আগেই ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সহযোগিতায় ওই খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণ পরিকল্পনা করে কিন্তু পরে মন্ত্রী হওয়ার পর ঐ সেতু সম্পন্ন করে নিজস্ব উদ্যোগে কসবা উপজেলাকে একই সুতোয় বেঁধে দিয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, কসবা এবং আখাউড়া উপজেলার প্রতিটি গ্রামে এখন পাকা রাস্তা ধরেই যাতায়াত করা যায়। তাও ঘটেছে আনিসুল হক এমপি ও মন্ত্রী হওয়ার পর। এখন এই দুই উপজেলায় আর কোনো রাস্তাই পাকা করার বাকি নেই। স্থানীয়রা বলছেন, রাস্তাঘাট সব হয়ে গেছে। এখন কোথাও খানাখন্দ হলে মেরামত করা হয়। রাস্তাঘাটের উন্নয়ন কাজ হয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর, সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) অধীন। শুধু রাস্তাঘাট নয়, কসবা ও আখাউড়ার প্রতিটি গ্রামে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নেও এই দুই উপজেলায় ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছেন আইনমন্ত্রী। প্রায় অর্ধশত বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। কসবা এবং আখাউড়ায় আধুনিক থানা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০ শয্যার একটি নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে যা এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। একই কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। আইনমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি না থাকলেও কসবা-আখাউড়ার একটি প্রাণের দাবি ছিল তিতাস নদী খনন করে এর পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখা। জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে আইনমন্ত্রী আখাউড়ার খড়মপুর মাজার থেকে কসবা উপজেলার ময়দাগঞ্জ গ্রাম পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার এলাকা খননের কাজে হাত দেন। এই খনন কাজের উদ্বোধন করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এলাকার অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি আইনমন্ত্রীর যে কাজটি এলাকাবাসীর মুখে মুখে তা হলো এলাকার শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। যখন উৎকোচ ছাড়া কোনো চাকরি পাওয়া প্রায় দুস্কর সেখানে আইনমন্ত্রীর হাত ধরে গত চার বছরে বিনা পয়সায় চাকরি হয়েছে প্রায় ১০০০ বেকার যুবক যুবতির । এদের বেশিরভাগই দরিদ্র এবং অসচ্ছল পরিবারের সদস্য।
আখাউড়া পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি ড. এডভোকেট আব্দুল্লাহ ভুইয়া বাদল জানায়, স্বাধীনতার পর যত এমপি নির্বাচিত হয়েছে তাদের সকলেই ব্যক্তিগত উন্নয়নে বিশ্বাসী ছিল তাই এলাকার তেমন উন্নয়ন হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবরেন্য আইনজীবী আনিসুল হককে মন্ত্রী করায় কসবা-আখাউড়ায় উন্নয়নের জোয়ার বইছে। মন্ত্রীমহোদয় শতভাগ সৎ মানুষ হওয়ায় এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করে দিচ্ছেন। আমরা কসবা-আখাউড়াবাসী প্রধানমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.