২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচন ও আমি; এ বিষয়ে কিছু কথা জানাতে চাই

নয়ন॥ ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে আমি বিগত দিনগুলোতে নিজেকে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডে নিয়োজিত রেখেছি। স্বাভাবিক রাজনৈতিক ও উন্নয়ন কর্মকান্ড ছাড়াও তৃণমূল পার্যায়ের উন্নয়নে আমি কাজ করছি। আপনারা এ সকল উন্নয়ন এবং রাজনৈতিক কর্মকান্ড সর্ম্পকে ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেনে থাকেন। আপনাদের সাথে যোগাযোগ রাখতে প্রিন্ট মিডিয়া ছাড়াও বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মে আমি সংযুক্ত থাকার চেষ্টা করি। কারণ আমি জনগনের প্রতি ‘দায়বদ্ধতা’র রাজনীতি কে বিশ্বাস করি ও চর্চ্চা করি। keya chudhury
আপনারা অনেকেই জানেন যে, ‘আমার এমপি’ নামক এরকম একটি অনলাইন প্লাটফর্মের সাথে আমি সংযুক্ত ছিলাম। উক্ত প্লাটফর্মের মাধ্যমে জনগণের করা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দেয়ার চেষ্টা করেছি।
গত এক সপ্তাহ ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারলাম যে, ‘আমার এমপি’ সকল নির্বাচনি এলাকার বর্তমান সংসদ সদস্য ও সম্ভাব্য প্রার্থীগণ নিয়ে একটি বেসরকারী চ্যানেলে আলোচনার আয়োজন করেছে।
আজ এই আয়োজনের প্রথম পর্বে হবিগঞ্জ- ১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও সম্ভাব্য প্রার্থীগণ নিয়ে অনুষ্ঠান হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ‘আমার এমপি’ থেকে আমার সাথে সরাসরি বা আমার এম্বেসেডরের মাধ্যমে কোনরকম যোগাযোগ করা হয়নি। অথচ হবিগঞ্জ-১ আসনের একজন সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আমাকে নিমন্ত্রণ করার কথা ছিল সবার আগে। কারণ, বিগত দিনগুলোতে আমি নবীগঞ্জ ও বাহুবলে আওয়ামীলীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডে নিজেকে আন্তরিকভাবে নিযুক্ত রেখেছি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে। এছাড়া জনগনের ও তৃণমূল আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের প্রত্যাশায় একজন সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এসব উন্নয়ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে নিজেকে সবসময় সম্মানজনক অবস্থানে ভেবেছি।
আমি একজন ভাষা সৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্বার সন্তান। আমি দেশকে ভালবাসী, দেশের জন্য কাজ করি।
♦ আমার জানামতে, এই অনুষ্ঠানে যে সকল অতিথিগণকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে, তাঁরা সকলেই নবীগঞ্জ উপজেলার। পরিচয় দিয়েছেন, বাহুবল – নবীগঞ্জ আসনের সাম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে। তবে কেন, বাহুবল উপজেলার কোন জনগণের সাক্ষাৎকার নেয়ার প্রয়োজন হলো না ?
♦ অর্থাৎ, বাহুবল উপজেলা থেকে কোন সম্ভাব্য প্রার্থীকেই সম্মান জানানো হয়নি ‘আমার এমপি’ থেকে। অথচ, আমি নিজে বাহুবলের সন্তান হয়েও, উন্নয়ন কর্মকান্ডে কখনই নবীগঞ্জ উপজেলা’কে কম গুরুত্ব দেইনি, বরং বেশি দেয়ার চেষ্টা করেছি। বেশি সময় দেই। বেশি উন্নয়ন করেছি। তবে এমন বৈষম্য কেন?
নবীগঞ্জ -বাহুবল উপজেলার জনগণ আমাকে হৃদয় দিয়ে ভালবাসে। আর এ সত্য কে ঢাঁকবার এক সুস্পষ্ট চিত্রপট এখানে প্রতিয়মাণ। আমার এমপি’র জন্য নিযুক্ত আমার এম্বেসেডর তার নিজ দায়িত্ববোধ থেকে এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে, আয়োজকদের সাথে যোগাযোগ করলে, সেটা থেকে জানানো হয় যে, আমি যেহেতু বর্তমানে সিলেট-হবিগঞ্জ সংরক্ষিত আসনের এমপি, তাই আমাকে উক্ত অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ জানানো হয়নি। পরবর্তীতে ‘মহিলা’ এমপিদের নিয়ে আরেকটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলে, তাতে আমাকে জানানো হবে। আমার এম্বেসেডর তখন আয়োজকদের আমার প্রার্থীতার ব্যাপারে নিশ্চিত করে নবীগঞ্জ-বাহুবল এলাকায় আমার অবস্থান সর্ম্পকে সরজমিনে খবর নিতে বলেন।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে, বর্তমান এমপি হলে কি সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় থাকা যাবে না? বা সম্ভাব্য প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে সংরক্ষিত আসনের এমপি হওয়াটা কি অন্তরায়?
♦ আরেকটা বিষয় হচ্ছে, ‘মহিলা’ এমপিদের নিয়ে আরেকটি অনুষ্ঠানে আমাকে জানানো হবে, এর মানে কি? হবিগঞ্জ-১ আসনে আমি নির্বাচন করতে চাইলে, অন্য কোন আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাথে বসার কি দরকার আছে? নারী প্রার্থী হিসেবে যদি আমাকে পেছনে রাখা হয়ে থাকে, তাহলে আমার নবীগঞ্জ-বাহুবলবাসী সকল নারী ভোটারদের অসম্মান জানানো হয়েছে।
♦ কারণ বর্তমান ভোটার তালিকা হালনাগাদ অনুযায়ী হবিগঞ্জ-১ আসনে নারী ভোটারদের সংখ্যা অধিক।
♦ জননেত্রী শেখ হাসিনা যেখানে নারীর ক্ষমতায়নের কারণে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছেন, সেখানে তাঁর কর্মী দাবিদার লোকজন যখন নারী হিসেবে একজন প্রার্থীকে মেনে নিতে পারেনা, তখন এটা তাদের জন্য লজ্জার। এ আসনের বৈশিষ্ট্যে, চা-বাগান ও হাওরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ দুটি বিষয়ে আমার সম্পৃক্ততা অন্য সকলের চেয়ে গভীরে। অথচ এখানে আমার মতামতকে সম্মান জানানো সুযোগ দেয়া হয়নি।
♦ নবীগঞ্জ-বাহুবলের সাধারণ মানুষ ও তৃণমূল আওয়ামী লীগের সহযোগীতায় এই ধরণের সকল ষড়যন্ত্র ও ঘৃণ্য কর্মকান্ডকে পেছনে ফেলে আমি এগিয়ে চলবো ইনশাআল্লাহ।
পরিশেষে আমি এটাই বলতে চাই, আমার এমপি’র যে বা যারা এইরকম একচোখা প্রার্থী বাছাই করতে পারে, তাদের দ্বারা কোন নৈতিক কিছু সম্ভব না এবং তাদের হবিগঞ্জ-১ আসন নিয়ে মাঠপর্যায়ের কোন জ্ঞান নেই। তারা জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দেয়ার কথা বললেও, আসলে তারা সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছে। যেহেতু আমি আমার এমপি’র এমন কর্মকান্ডে অসম্মানবোধ করছি, তাই আমি এই প্লাটফর্মে আজ থেকে আর থাকছিনা। এরই সাথে সাথে আমার নিযুক্ত এম্বেসেডরও তার এম্বেসেডর পদে আর থাকছেন না। । এটাই হবে আমার পক্ষ থেকে নীরব প্রতিবাদ।
সবাই ভালো থাকুন। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

Leave a Reply

Your email address will not be published.