নির্বাচনে যাওয়ার দরকার নেই খালেদা জিয়া

প্রশান্তি ডেক্স॥ একদিকে মামলা অন্যদিকে তারা নির্বাচন করবে- এটা তো হতে পারে না ৩ জানুয়ারি অভিযোগ গঠনের পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য। নাইকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘মামলা দিয়ে কোটের মাধ্যমে আমাদের আটকে রাখা হচ্ছে। তাহলে আমাদের বলে দেয়া হোক যে, আমাদের নির্বাচনে যাওয়ার দরকার নেই।’Nerbachone Jayar dorkaer ni
তিনি বলেন, ‘একদিকে মামলা চলবে, অন্যদিকে তারা (ক্ষমতাসীন দল) নির্বাচন করবে -এটা তো হতে পারে না।’
নাইকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য গত বুধবার বেলা ১১টা ৫৮ মিনিটে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯নং বিশেষ জজ মাহমুদুল কবিরের আদালতে খালেদা জিয়াকে হাজির করা হয়। হুইল চেয়ারে বসে তিনি আদালতে আসেন।
নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারেই দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বন্দী আছেন খালেদা জিয়া।
শুনানিতে অংশ নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন প্রশ্ন রাখেন, ‘আমার মামলাগুলো কেন এত দ্রুত বিচার করা হচ্ছে? কয়টা মামলা দ্রুত বিচারে নিষ্পত্তি করা হয়েছে? সেভেন মার্ডার (নারায়ণগঞ্জের সাত খুন) কি দ্রুত বিচার আইনে হয়েছে?’
‘বর্তমান রাজনীতির সঙ্গে সবকিছু চলছে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
খালেদা জিয়া নির্বাচনের পর অভিযোগ গঠনের পরবর্তী শুনানির জন্য অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে আমার নেতাকর্মীরা ব্যস্ত থাকবেন। কেউ আসতে পারবেন না। এ কারণে নির্বাচনের পর শুনানির দিন ধার্য করা হোক।’
খালেদা জিয়ার বক্তব্য শেষে আদালত ৩ জানুয়ারি অভিযোগ গঠনের পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, কানাডীয় প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় নাইকো দুর্নীতি মামলাটি করেন।
মামলা করার পরের বছর ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সাংসদ এম এ এইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দুদকের দায়ের করা দুই মামলায় ১০ ও ৭ বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত হয়েছেন। আপিলে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের কারাদন্ড বেড়ে ১০ বছর এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিশেষ আদালতে ৭ বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত হন তিনি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার পর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে খালেদা জিয়াকে বন্দী রাখা হয়। সেখান থেকেই গত ৬ অক্টোবর চিকিৎসকদের পরামর্শে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নেয়া হয়। টানা এক মাস ২ দিন বিএসএমএমইউয়ে চিকিৎসা নেয়ার পর ৮ নভেম্বর তাকে কারাগারে ফিরিয়ে আনা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.