উন্নয়নের ধারবাহিকতা ধরে রেখে আগামীর উন্নয়ন এবং কিছু দুর্নাম ঘুছানোর সুযোগ এখন হাতছানি দিয়ে ডাকছে। কোথায় কোথায় এবং কিভাবে কাজ করে ঐ দূর্নাম ঘুছবে তা সংক্ষিপ্তাকারে প্রকাশ করছি। কথা হলো বিদেশীরা কিভাবে জানে এই দেশে দুর্নীতি রয়েছে। তা খুবই সহজ এবং এই জানার সঙ্গে বিদেশীরা নিজেরাই সংশ্লিষ্ট। বিশেষ করে বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে যারা কাজ করে যাচ্ছে এবং যারা এই দেশে চাকুরীর সুযোগ নিয়ে এসেছে এবং চাকুরী সম্পন্ন করে দেশে ফিরে যাচ্ছে; তারা সবাই আমাদের দেশের দুর্নিতীর চিত্রকে হৃদয়ে এবং বাস্তবে অংকন করে প্রমানসহ নিয়ে যাচ্ছেন। এই ক্ষেত্রে ভিসা অফিস; সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স (এসবি, এন এস আই, হোম), টেক্স অফিস (এন বি আর), জয়েন্ট ষ্টক, এন জি ও ব্যুরো; এই জায়গাগুলিই বিশেষ করে বাংলাদেশকে লজ্জ্বার আসনে বসাতে জোরালো ভ’মিকা রাখে।
কিভাবে?
যখন কোন প্রতিষ্ঠান বা এর কর্মীগন ভিসা অফিসে যান ভিসার জন্য তখন শুরু হয় বিভিন্ন রকমের হয়রানি। প্রথমেই বলতে হয় ভিসা অফিসে লোক কম এবং অভিজ্ঞ এমনকি বিসিএস ক্যাডার এর অভাব পরিলক্ষিত। ফাইল গ্রহণ এবং ডেলিভারীর ক্ষেত্রে তৈরী হয় জটিলতা বা জট। কোনসময় এটাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশন জট হিসেবেও আখ্যায়িত করা যায়। মাঝে মঝে বিভিন্ন বাহানার ছলে ভিসা জটিলতায় ফেলে অবৈধ ফায়দা লুটে। ভিসার ক্ষেত্রে সিকিউরিটি ক্লিায়ারেন্স একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু এই সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স ভিসা প্রার্থীর দেয়ার কথা নয় এমনকি পাওয়ারও কথা নয়। তারপরও এই ইস্যুটিকে প্রাধান্য দিয়ে ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে ভিতিকর অথবা অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করে। এনজিও অথবা কোম্পানীতে কর্মরতদের ভিসার জটিলতা শেষে তাদের পরিবারের ক্ষেত্রে আরো কঠিন জটিলতা সৃষ্টি হয়। সেই ক্ষেত্রে এই জটিলতাও একটি দুর্নামের কারন। তাই এই জটিলতাগুলো দুর করে সহজিকরণ করার ব্যবস্থা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। কারন এই ভিসার ক্ষেত্রে যারা জড়িত তারা সবাই কিন্তু বিদেশী; আর এই বিদেশীরাই কিন্তু দূর্নীতির আওয়াজ তুলে আমাদেরকে ধাবিয়ে রাখতে চায়।
সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স এর জন্য ধরনা দেয়ার প্রয়োজন হয় এন এস আই এবং এস বি’র কাছে। উভয় সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্তরাই সম্মানী ছাড়া অনাপত্তির ছাড়পত্র দেয় না। যদি কোন প্রতিষ্ঠান উপরি বা সম্মানী দিতে না চাই তাহলেই বাধে বিপত্তি। সেই ক্ষেত্রে নিশ্চিত পাওয়া যায় আপত্তি। আর ঐ আপত্তির ফলে প্রতিষ্ঠান এবং কর্মী উভয়ই দন্ডিত হয় (অর্থ, সময় এবং কাজে)। ঐ সম্মানীর অর্থ কিন্তু প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশীর উভয়েরই কাছ থেকে যায়। যা তারা ঘূষ হিসেবে আখ্যায়ীত করে দুর্নামের ফর্দটাকে দীর্ঘায়িত করেন। যদি ঐ সম্মানীটুকু সরকারী হিসেবে খাতায় যুক্ত করা যায় এবং ঐ টাকা সংশ্লিষ্টদের দেয়া যায় তাহলে হয়তো বৈধতা পাবে এবং দুর্নামকে সুনামে পরিণত করা যাবে। এইখানেও আমাদের গুরুত্ব দিয়ে সমাধানকল্পে কাজ করতে হবে। এই ক্ষেত্রে সেবা ও সুরাক্ষা বিভাগকে আরো সচেতন হয়ে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করতে হবে। কোন রকম হয়রানি বা সম্মানী ব্যতিরেকেই কাজটুকু সমাধান করে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করতে হবে।
এনবিআর এর কথা বলতেই বুক কাপে। দেশী ও বিদেশী কারোরই রেহাই নেই এই হায়েনাদের কাছ থেকে। ব্যক্তিগত টেক্স দিতে গিয়েও হয়রানির স্বীকার হতে হয় আবার টেক্স পরিশোধের পর টেক্স ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পেতেও হয়রানি এবং মোটা অংকের সম্মানীর অর্থ গুনতে হয়। তাই এই জায়াগাতেও কাজ করে সহজলব্ধভাবে টেক্স দেয়া এবং সার্টিফিকেট পাওয়ার ব্যবস্থা করে দুর্নাম ঘোচাতে হবে। নতুবা দুর্নামের ফর্দটি আরো দীর্ঘায়িত হবে।
জয়েন্ট ষ্টকে কোন রিটান এমনকি পরিবর্তন ও পরিবর্ধন এমনকি সংযোজন বা বিয়োজন অথবা নতুন কোম্পানী, সোসাইটি সহ ইত্যাদি করতে গেলে সময় ও অর্থ দুটোই দিয়ে আসতে হয়। নতুবা ঐ কাজ মাটি চাপা পড়ে থাকবে বছরের পর বছর ধরে। এই কাজটুকুতেও বিদেশীরা জড়িত। বিদেশী ও দেশী উভয়ই মিলে এই দুর্নীতির দুর্নাম আমাদের কাধেঁ প্রতিনিয়ত বসিয়ে দেন। সুতরাং আমাদের সেবকদল যারা ঐ পদগুলোতে বসে আছেন তাদের উদাসিনতা এমনকি অজ্ঞতা বা পাপের পতনের ফলে দেশের উপর চাপানো দূর্নামের ফর্দটিকে ছোট করার এমনকি পরিস্কার করার এখনই উপযুক্ত সময় ও সুযোগ। তাই সকলে মিলেই এই কাজটুকু করে দেশকে সম্মানে সম্মানী করতে এগিয়ে আসুন।
এনজিও ব্যুরো হল একটি জলন্ত আগুনের টুকরা। ঐ টুকরায় যাদেরই গ্যা বা শরীর স্পর্শ করে তারাই জ্বলতে জ্বলতে দুর্নামের ফর্দ বড় করতে থাকেন। যে কোন কাজ করতে গেলে বিশাল অংকের সম্মানী গুনতে হয় নতুবা ঐ কাজ না হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ভাগ জাগ্রত থাকে। রেজিষ্ট্রেশন, নবায়ন, অর্থ ছাড়, ওয়াক পারমিট (কর্মানুমতি) সহ সংশ্লিষ্ট কাজ জটলাবিহীন, সম্মানীবিহীন করার জন্য এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি ১০০ভাগ বাস্তবায়ন করে দেশকে কলঙ্কমুক্ত করতে হবে। এনজিওতে অর্থ দাতাও বিদেশী এবং কর্মী বা কর্মকর্তাও বিদেশী যার জন্য আমাদের সুবোধ বাবুদের কৃতকর্ম দ্রুত প্রকাশ পেয়ে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে খুবই দ্রুত সময়ে। আর এই কারণে দুর্নীতির ফর্দ বড় করে দেশকে অসম্মানের আসনে বসাতে মরিয়া হয়ে উঠে ঐ ভোক্তভোগীরা। বুকে সাহস রেখে বলতে চাই আমরাই পারব এই জঞ্জাল থেকে মুক্ত করে দেশ ও সরকারের ভাবমুর্তি উজ্জ্বল করে আগামীতে দুর্নীতির দুর্নাম ঘুছাতে।
আসুন সবাই মিলে এই এই পবিত্র কাজে ঝাপিয়ে পড়ি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে এগিয়ে নিয়ে যায় আগামীর সু উচ্চ সম্মানের স্থানে। আমরা পেরেছি, পারব এবং করে দেখাবো এই প্রত্যয়ে এগিয়ে যায় আগামী সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে পাক সাফ বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা উপহার দিতে। প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষনে পরিস্কার করে বলেছেন আমাদের আগামীর করনীয় কি এবং কিভাবে ঐ করনীয়কে বাস্তবে রূপদান করা হবে। তিনি এবং তাঁর মন্ত্রীপরিষদকে এই মূলমন্ত্রে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যুগিয়েছেন। এই দিকনির্দেশনা দেখেই সরকারী এবং বেসরকারী অফিসের কর্মী ও কর্মকর্তারা একযুগে কাজ করে এগিয়ে যাবেন।
এইতো সংসদ অধিবেশন শুরু হলো এবং এই অধিবেশনেই শ্রদ্ধা ও সম্মান এবং সততার আদর্শকে কিভাবে প্রদর্শন ও ধারণ/ লালন করতে হয় তা জাতিকে দেখিয়েছে এবং শিখিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই শিক্ষাই যেন সমাজের সর্বস্তরে বিরাজমান থাকে তাই আমাদের কামনা। জাতি আরো দেখেছে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কিভাবে তার দিকনির্দেশনা দিয়েছেন নিয়মতান্ত্রিক ভাষণে। এই সকল দিকনির্দেশনাই আগামীর করনীয় ঠিক করে দেয় বলে আমার বিশ্বাস। তবে এই করনীয়কে বাস্তবায়নের জন্য দরকার জনসম্পৃক্ততা। আর তার জন্য প্রয়োজন সকল এমপিগণের জনসম্পৃক্ততামূলক কর্মসূচীনির্ভর কর্মকান্ড। এই বিশাল জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে গেলে কোন বাধাই আমাদের সামনে বাধা হয়ে দাড়াতে পারবে না। জয় সুনিশ্চিত আগামীর পরিচ্ছন্ন এবং পাক সাফ বাংলাদেশের ও এর অভ্যন্তরে বসবাসকারী সকলের জন্য।
সামনে আসছে উপজেলা নির্বাচন। তাই ঐ নির্বাচনও যেন; হয় পরিচ্ছন্ন এবং সকলের সম্মিলনের একটি আনন্দের ফসল। আর ঐ ফসলকে নিয়েই জাতি এগিয়ে যাবে বর্তমানের অব্যাহত দায়িত্ব বহমান রেখে। আমাদের সামনে রয়েছে নতুন এবং পুরানের সমন্বয়ে এগিয়ে যাওয়ার সমুহ সম্ভাবনা। আসুন আমরা নতুককে স্বাগত জানাই এবং পুরাতনকে সম্মান প্রদর্শন করি ও তাদের দেয়া অভিজ্ঞতার বোঝা বহন করে এগিয়ে যায়। জয় হউক আমাদের আগামীর প্রজন্মের এবং ইতিবাচকতার। এভাবেই পরিচ্ছন্ন করি বাংলাদেশকে। এগিয়ে যায় প্রধানমন্ত্রীর দেখানো পথে।