উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে দেশের উন্নয়নে কাজ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রশান্তি ডেক্স॥ মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে দেশের উন্নয়নে কাজ করতে বিসিএস প্রশাসন কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি তাদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা আপনাদের মেধা দিয়ে এই চাকরিতে এসেছেন, কাজেই আপনাদেরকে সেই মেধা থেকে উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে দেশের উন্নয়নের জন্য নতুন নতুন কর্মসূচি নিতে হবে এবং সেটাও আপনাদের চিন্তা করতে হবে। আপনারা সেইভাবে কাজ করবেন, সেটাই আশা করি।uddabon shokte deya dashe kaj korer ahobban
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশনের ‘বার্ষিক সম্মেলন-২০১৯’এ তিনি একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের একটাই লক্ষ্য যে, বাংলাদেশকে আমরা এমনভাবে গড়ে তুলতে চাই যেন বিশ্ব দরবারে বাঙালি জাতি মাথা উঁচু করে সম্মানের সাথে চলতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী এসময় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতার হত্যাকান্ডে দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার কথা তুলে ধরেন এবং এরপর টানা মেয়াদে সরকারের ধারাবাহিকতায় দেশের উন্নয়ন কর্মসূচি ও তার সুফল দেশের জনগণ পেতে শুরু করেছে বলে উল্লেখ করেন। আর সরকারের এই উন্নয়ন কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়নে সরকারি কর্মকর্তারা বিশেষ অবদান রাখছেন জানিয়ে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি।
এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সবসময় একটা জিনিস চেষ্টা করেছি, যারা কাজ করবে, সেই কাজ করবার একটা উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি

করা এবং দেশকে ভালবাসতে হবে, দেশের মানুষকে ভালবাসতে হবে, দেশের উন্নয়ন করতে হবে। এই চিন্তাটা মাথায় রেখে সকলের কর্মক্ষেত্রে স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করা।
তিনি আরও বলেন, সেইসঙ্গে এই দেশকে আমরা দুর্নীতিমুক্ত করতে চাই। আমরা দারিদ্রমুক্ত করতে চাই। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে চাই। মানুষের জীবনে শান্তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। আমাদের সকল পরিকল্পনাই সেভাবে গ্রহণ করি। তাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। দুর্নীতি শুধু যে গ্রহণ করবে, গ্রহণকারীই না, প্রদানকারী এবং গ্রহণকারী উভয়েই সমভাবে দোষী। সেইভাবে দেখতে হবে। আমাদের সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে কিন্তু সম্পদের এই সীমাবদ্ধতাকে নিয়েও দেশকে উন্নত করা যায় আমরা তা ইতোমধ্যে প্রমাণ করেছি।
জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ গড়ার কথা তুলে শেখ হাসিনা বলেন, সে কারণে আমরা চাই দুর্নীতির বিররুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখতে। মাদক সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। উন্নয়ন প্রকল্পগুলি পরিকল্পিতভাবে নিতে হবে এবং আপনারা আপনাদের মেধা দিয়ে এই চাকরিতে এসেছেন কাজেই আপনারা সেই মেধা থেকে উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে দেশকে উন্নয়নের জন্য নতুন নতুন কর্মসূচি নেওয়া যায়, সেটাও আপনাদের চিন্তা করতে হবে। সেইভাবে কাজ করবেন, সেটাই আশা করি। আমাদের দায়িত্ব একটা কর্ম-উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা। কর্মক্ষেত্রে আপনারা যাতে ভালভাবে বসবাস করতে পারেন, জীবনমানটা যেন উন্নত হয়, সহজ হয় সুন্দর হয় ও শান্তিপূর্ণভাবে যেন সংসার চালাতে পারেন, সে দিকে দৃষ্টি রেখে যা যা করণীয় আমাদের সাধ্যমত আমরা কিন্তু তা করেছি।
দারিদ্রের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব দিকেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। কিন্তু তার বিনিময়ে আমরা কি চাই? বাংলাদেশের মানুষ দারিদ্র মুক্ত হবে, উন্নত জীবন পাবে। আমরা দারিদ্র্য হ্রাস করেছি। দারিদ্র্যের হার ২১ ভাগে নামিয়ে এনেছি কিন্তু আমি চাই আরও কমাতে। যারা একদিন বলেছিল, এই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে কি হবে? বটমলেস বাস্কেট হবে, তাদের দেশের দারিদ্রের যে হার তার অন্তত ১ ভাগ হলেও কমাতে হবে। এটাই আমার কথা। আমরা দেখাতে চাই, আমরা পারি। আমরা মুক্তিযুদ্ধে যেমন বিজয় অর্জন করতে পারি, আবার দারিদ্রমুক্তও করে বাংলাদেশে গড়তে পারি। সেটা আমাদের প্রমাণ করতে হবে। এজন্য আপনাদের সহযোগিতা কাম্য। এলক্ষে জনগণের কল্যাণে কর্মসূচি প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানান তিনি।
পাশাপাশি কৃষি জমির যাতে ক্ষতি না হয় সে দিকে দৃষ্টি রেখে আগামী দিনে শিল্পায়নের দিকে নজর দিয়ে যথাযথ পরিকল্পনা নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান করেন শেখ হাসিনা। তাহলেই বাংলাদেশ তার অভীষ্ট লক্ষে পৌছাতে পারবে বলে আশাবাদ করেন।
বাংলাদেশ এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এরপর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, মন্ত্রীপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের মহাসচিব স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব শেখ ইউসুফ হারুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.