বাপ্রেস॥ জাসদ একাংশের কার্যকরী সভাপতি ও সংসদ সদস্য মইন উদ্দিন খান বাদল বলেছেন, ব্রিজের জন্য যদি আমাকে আওয়ামী লীগ করতে হয়, প্রয়োজনে সেটাও করতে রাজি। শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামে সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ডিসেম্বরের মধ্যে কর্ণফুলীর কালুরঘাট সড়ক ও রেল সেতু নির্মাণের পরিণতি না দেখলে আসসালামু ওয়ালাইকুম বলে সংসদ থেকে চলে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়ে, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের এমপি বলেন, আমি সরকারি জোটের এমপি, ব্রিজের জন্য যদি আমাকে আওয়ামী লীগ করতে হয়, প্রয়োজনে সেটাও করতে রাজি। সাংসদ বাদল বলেন, ‘আমি এখন জীবনসায়াহ্নে পৌঁছেছি। গত ১০ বছর কম করে হলেও ২০ বার সংসদে সেতুর কথা বলেছি। এখন কালুরঘাট সেতু (রেলসেতু) যে অবস্থায় আছে, সেটার ওপর দিয়ে মাত্র দুই কি তিনটি ট্রেন চলে। দোহাজারী বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ফার্নেস অয়েল যায় আর একটা লোকাল ট্রেন যায়, আরেকটা আসে। সেই ট্রেনগুলো মাত্রা আড়াই মাইল বেগে চলে, কখন ব্রিজ ভেঙে পড়বে এই ভয়ে। আমি বলতে চাই, ব্রিজ আর কতটা ভাঙলে নতুন করে বানানো হবে?’ সেতু নির্মাণে ডিসেম্বর পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়ে তিনি বলেন, ৫০ হাজার লোক এ সেতু দিয়ে হেঁটে পার হন। ২-৩ ঘণ্টা গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করতে হয়। এ সময় তারা আমার মৃত মাকে গালি দেন। এর থেকে মুক্তি চাই।নগরবাসীর মতামতকে উপেক্ষা করে চট্টগ্রামে অপরিকল্পিতভাবে ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি একদিন স্পিকারকে বললাম, চট্টগ্রাম হচ্ছে অষ্টম আশ্চর্যের শহর। এই শহরে ফ্লাইওভার বানানো হয়েছে। এই ফ্লাইওভারের ওপরেও পানি ওঠে, নিচেও পানি ওঠে। নগর পরিকল্পনাবিদ, দলের মন্ত্রী-এমপিদের মতামতের তোয়াক্কা না করে এই ফ্লাইওভারগুলো বানানো হলো কেন? প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি- নির্বাচিত প্রতিনিধিকে বাদ দিয়ে সিডিএকে দিয়ে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন, এ জন্য তো আপনাকে একদিন মামলা খেতে হবে।’ চট্টগ্রাম খুবই স্পর্শকাতর এলাকা উল্লেখ করে স্থানীয় এই সাংসদ বলেন, এটিকে কুড়িগ্রাম ভাবলে হবে না। রেল তো টানেল দিয়ে যাবে না। কালুরঘাট সেতু দিয়ে কক্সবাজারে রেল যাবে। আমাদের দাবি, রেল কাম সড়ক সেতু করা হোক। কালুরঘাটে সড়কসহ রেলসেতু না করলে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন বানিয়ে কোনো লাভ হবে না। এই সেতুটি নির্মাণের পরিকল্পনায় এই পর্যন্ত চারবার সমীক্ষা পরিচালিত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়া, তাইওয়ান, বাংলাদেশ ও কোরিয়ান পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সমীক্ষাগুলো চালিয়েছে। কোরিয়ান পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সমীক্ষা শেষে মাত্র ১১শ’ ৯০ কোটি টাকায় এই সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতার প্রতিবেদন দিয়েছে। এমনকি সেতুটি নির্মাণের ব্যাপারে তারা ৮শ’ কোটি টাকা কোরিয়ান অর্থ সহায়তার প্রস্তাবনাও দেয়। সেতুটি নির্মাণে সরকারের মাত্র ৩৯০ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা সময়ের ব্যাপার মাত্র। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, দেশ রূপান্তর চট্টগ্রাম ব্যুরো চিফ ফারুক ইকবালসহ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা।