আ. লীগ নেতাদের ‘কীর্তির’ ছবি/ ভিডিও শেখ হাসিনার হাতে

প্রশান্তি ডেস্ক রিপোর্ট ॥ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষ ও প্রভাবশালী নেতার বিভিন্ন কর্মকান্ডের ছবি ও ভিডিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে রয়েছে বলে জানতে পেরেছেন দলটির নেতৃবৃন্দ। এগুলোর মধ্যে বর্তমান ও সাবেক মন্ত্রী, দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও সংসদ সদস্যদের ছবি রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ জনের ছবি ও ভিডিও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আছে বলে কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন। নেতারা বলেছেন, গত বুধবার রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ও দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা তার মোবাইল ফোন বের করে গ্যালারিতে সংরক্ষিত বিভিন্ন নেতার ছবি বের করে তাদের দেখান। শেখ হাসিনা প্রায় ২০টি ছবি নেতাদের দেখিয়ে বলেন, আরও অনেক ছবি আছে আমার কাছে।বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর দুই সদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফোন গ্যালারিতে কয়েকজন নেতার ছবি ও ভিডিও সংরক্ষিত আছে। কে কোথায় গিয়ে ক্যাসিনো খেলেন, সেই ছবিও মোবাইল ফোন থেকে বের করে দেখান শেখ হাসিনা।ওই দুই নেতা জানান, যুবলীগ নামধারী ঠিকাদার জি কে শামীমের সঙ্গে আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের ছবিও শেখ হাসিনার মোবাইল ফোনে আছে এবং সেগুলো তিনি নেতাদের দেখান। এছাড়া যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের সঙ্গে কোন কোন নেতা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন অবৈধ জায়গায় গিয়ে আনন্দ করেছেন সেসব ছবি ও ভিডিও দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানী ঢাকায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর সবচেয়ে আলোচিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি সম্রাট। সম্প্রতি সম্রাট কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার হওয়ার পর সংগঠন থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান এ অভিযান অব্যাহত থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করে আসছেন।প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে গণভবনের বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর এক সদস্য বলেন, ‘আমি যে অভিযান শুরু করেছি, তার আগে সব তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করেই নেমেছি। তিনি বলেন, অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও আমার কাছে রয়েছে। চাইলেই যে কেউ অস্বীকার করবে তার কোনো উপায় নেই’।ওই নেতা বলেন, মোবাইলে সংরক্ষিত থাকা ছবিতে সভাপতিমন্ডলীর, সম্পাদকমন্ডলীর ও কেন্দ্রীয় সদস্য, সাবেক ও বর্তমান মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী এবং সংসদ সদস্যও আছেন। সহযোগী সংগঠনের নেতাদের অপকর্মের ছবিও আছে। বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের প্রধানমন্ত্রী জানান, এ ছবিগুলোর কোনোটাই মেইক বা ফেইক ছবি নয়। এগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। ছবিগুলোর মধ্যে শেখ হাসিনার আত্মীয় বলে পরিচিত কয়েকজনও আছেন।শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে আওয়ামী লীগের অন্য দুই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ছবিগুলো দেখাতে দেখাতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই হলো আওয়ামী লীগ নেতাদের অবস্থা।’এ সময় তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘আমি কাউকেই ছাড়ব না। যেহেতু ধরা শুরু করেছি, শেষ দেখেই ছাড়ব।’বৈঠকে উপস্থিত আরেক নেতা বলেন, ‘ওই বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজনের ছবিও প্রধানমন্ত্রীর মোবাইল ফোনে ছিল। তবে বিব্রতকর অবস্থায় পড়বেন বলে ওই নেতাদের ছবি দেখাননি প্রধানমন্ত্রী।’বৈঠকে উপস্থিত সম্পাদকমন্ডলীর এক সদস্য বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এ অভিযান পরিচালনায় নতুন কৌশল গ্রহণ করেছেন বলে আমার মনে হয়েছে। এ অভিযান চলবে এ ব্যাপারে অনড় শেখ হাসিনা।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.