প্রশান্তি ডেক্স ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত মঙ্গলবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন চলমান শুদ্ধি অভিযান নিয়ে বিএনপির অভিযোগ, এটা সরকারের ‘আইওয়াশ’। এ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অভিযানে আপন-পর কোনো কিছু দেখা হয়নি। অপরাধজগতের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদেরই ধরা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আইওয়াশের ব্যবসাটা বিএনপি ভালো জানে। অপেক্ষা করেন, আইওয়াশ নাকি, দেখা যাবে।’ গত মঙ্গলবার বিকালে গণভবনে সদ্য সমাপ্ত আজারবাইজানে ন্যাম সম্মেলন নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেছেন। বিএনপি বলছে, আওয়ামী লীগকে একা করা হবে, প্রধানমন্ত্রীকে ভয় দেখানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী তাতে ভীত কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম। আমার বাবাকে দেখেছি, কীভাবে তিনি সাহসের সঙ্গে রাজনীতি করে এই বাংলাদেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। কাজেই ভয় শব্দটা আমার নেই। ছোট থেকেই নেই। আর ভয় পাওয়ারও কোনো কারণ নেই। ভয় পেলে এই অভিযানে আমি নামতাম না। কে কোন দল করে, সেটা আমার কাছে বিবেচ্য বিষয় না। শুরু করলে ঘর থেকেই করতে হয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি দুর্নীতির খনি। তিনি ১৯৭৫ সালের ঘটনা ও জিয়াউর রহমানের প্রসঙ্গ টানেন। বিএনপির প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই হত্যা, দুর্নীতির মামলা আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই দলের চেয়ারপারসন দুর্নীতির দায়ে কারাগারে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দুর্নীতিগ্রস্ত এবং মামলার দায়ে দেশান্তর। তাদের মুখে এত কথা কোত্থেকে আসে।’ শেখ হাসিনা বলেন, আসল দুর্নীতিবাজদের দুজন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার ছেলে শাস্তি পেয়ে গেছেন। বিএনপির আরও নেতা আছেন, যারা অপরাধী, পর্যায়ক্রমে সবাই শাস্তি পাবেন। ১০০ জনে তালিকা দুর্নীতি দমন কমিশনকে দেওয়া হয়েছে ব্যবস্থা নিতে। আর কতজনের তালিকা প্রধানমন্ত্রীর হাতে আছে, তা জানতে চাইলে বলেন, কতজনের তালিকা আছে, এটা তিনি এখন বলবেন না। এ সময় তিনি জানান, কোনো এক পত্রিকার সম্পাদক এক ব্যাংকের এমডিকে ফোন করে ওই ব্যাংকের চেয়ারম্যানের কাছে টাকা চেয়েছেন, নয়তো তাদের বিরুদ্ধে লেখা হবে। এসবও বের হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। রাজনীতিবিদের বাইরে অন্য ক্ষেত্রের দুর্নীতিবাজদের ধরা প্রসঙ্গে বলেন, সময় বলে দেবে। অভিযানের মধ্য দিয়ে সবাইকেই ধরা হবে।
বিপুল পরিমাণ আমদানির তথ্য জানিয়ে পেঁয়াজের বাজার কয়েকদিনের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে আসার আশা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ন্যাম সম্মেলনে অংশগ্রহণ নিয়ে গত মঙ্গলবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, পেঁয়াজ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। দুই-চার দিনের মধ্যে দাম কমবে। বাজার সহনীয় করতে ১০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আরও ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। এ সময় রসিকতাচ্ছলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পেঁয়াজ না খেলে কী হয়? পেঁয়াজ ছাড়াও কিন্তু রান্না হয়, আমি করি, আমাদের বাসায় করে। অনেক তরকারি আছে, যা পেঁয়াজ ছাড়াও রান্না করা যায়। কাজেই পেঁয়াজ নিয়ে এত অস্থির হওয়ার কী আছে, আমি জানি না।’ আড়তদাররা পেঁয়াজ মজুদ করে সঙ্কট আরও বাড়িয়ে তুলেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পেঁয়াজ কিন্তু অলরেডি আছে। তাছাড়া পত্রিকাতেই খবর আসছে যে অনেক স্থানে পেঁয়াজ রয়ে গেছে। কিন্তু তারা কেন বাজারে ছাড়ছে না? যারা এখন মজুদ করে রেখেছে, তারা কতদিন ধরে রাখতে পারবে, সেটাই বড় কথা। কারণ পেঁয়াজ কিন্তু পচে যায় আবার। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে গিয়ে তাদের লোকসানই হবে, লাভ হবে না।’ ক্যাসিনোর খবর কেউ দিল না কেন? বাংলাদেশে যেখানে এক হাজারের বেশি সংবাদপত্র প্রকাশিত হচ্ছে, ৩২টির বেশি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল চলছে, বাংলাদেশে এভাবে ক্যাসিনো বসিয়ে জুয়ার আসর চলার খবর কেন কেউ আগে প্রকাশ করল না- সেই প্রশ্ন রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সামনে রেখে তিনি বলেন, ‘আপনারা এত খবর রাখেন, তো এ রকম আধুনিক আধুনিক সমস্ত যন্ত্রপাতি এসে গেছে, এত কিছু হলো, আপনারা কেউ খবর রাখলেন না? কেউ খবর পেলেন না? কোনোদিন কেউ তো নিউজ করলেন না। কীভাবে হয়?’ ক্রিকেটারদের আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন করতে গিয়ে লোকমানের প্রসঙ্গ টেনে একজন সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বোর্ডে একজন ‘ক্যাসিনোবাজ’ ঢুকে পড়েছেন, এখনও বহাল তবিয়তে আছেন। বোর্ড ‘প্রপারলি ফাংশন’ করছে কি না সেই প্রশ্ন উঠেছে। উত্তর দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্রিকেটারদের আন্দোলনের সঙ্গে ক্যাসিনো টেনে আনা ঠিক হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘এই কাসিনো খেলার সাথে কে কে জড়িত এটা তো ক্রিকেট বোর্ডের বিষয় না। হয়তো এখানে একজন ছিল। সে রকম তো আপনাদের সাংবাদিক মহলেও যদি খোঁজ করা যায়, অনেককে খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। ভবিষ্যতে যদি খুঁজে পাওয়া যায় তো কী করব আমি? সেটাও তো আপনাদের ভাবতে হবে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ক্যাসিনো কান্ডের সেই পরিচালক ধরা পড়েছে। সে বহাল তবিয়তে আছে- তাও নয়। তাকে তো ধরা হয়েছে। এটা কিন্তু আপনারা কেউ কখনও নিউজ করেননি। কোনো সাংবাদিক, কোনো সংবাদপত্রে কিন্তু একটা নিউজও আসে নাই যে বাংলাদেশে এ রকম ক্যাসিনো খেলা হয়। এ সময় সাংবাদিকরা কিছু বলার চেষ্টা করলে তাদের থামিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নো, নো, কোথাও আমি নিউজ পাইনি, এটা বলে লাভ নাই। ক্যাসিনো সম্পর্কে কেউ কোনো নিউজ দেননি। তিনি বলেন, ‘এটা ধরার দায়িত্ব আমি নিয়েছিলাম। আমি খুঁজে পেয়েছিলাম, আমিই করিয়েছি, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমার কাছে যে কোনোভাবে হোক খবর যখন এসেছে, সঙ্গে সঙ্গে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, যাকে দিয়ে করলে যথাযথভাবে হবে, তাকে দিয়ে করিয়েছি।’ সংবাদমাধ্যম কেন সেই খবর আগে দিল না- আবারও সেই প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ রকম একটা বিষয় বাংলাদেশে ঘটে যাচ্ছে নীরবে, বাংলাদেশে সব থেকে বেশি সংবাদপত্র, কয়েক হাজার সংবাদপত্র, বেসরকারি চ্যানেল বাংলাদেশে আগে তো একটাই ছিল। আমিই তো সব ওপেন করে দিলাম। ৪৪টা চ্যানেলকে আমরা পারমিশন দিয়েছি, তার মধ্যে ৩২টার মতো চালু। কোনো একটা চ্যানেল থেকে কোনো দিন এই নিউজটা কেন দিতে পারলেন না, এই জবাবটা কী জাতির কাছে দিতে পারবেন? পারবেন না। তাহলে আপনারা কাকে দোষ দেবেন? উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ধরব আমরা, আর এ ব্যাপারে আমাদেরই প্রশ্ন করবেন, এটা তো হয় না। এখন আরেকটু সাহায্য করেন, খুঁজে বের করেন কোথায় কী পাওয়া যায়। আমার তো প্রশ্ন, এ রকম একটা ঘটনা বাংলাদেশে ঘটে যাচ্ছে, অথচ কেউ জানে না, সবাই নীরব! হোয়াই? কী কারণে? কারণটা কী?… সেজন্য বললাম, কখন কে কোথায় কী কারণে ধরা পড়ে এটা তো বলা যায় না।’ খালেদা-তারেক শাস্তি পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মূল দুর্নীতিবাজদের দুজন তো শাস্তি পেয়েই গেছেন- খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান। তাদের আরও কিছু খুচরা নেতা আছে। দুর্নীতি, অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ খুন-বহু অপরাধে অপরাধী এই নেতাদেরও সাজা পেতে হবে। চলমান শুদ্ধি অভিযানে রাজনীতিবিদ ব্যবসায়ী এমনকি সাংবাদিকদেরও নাম এসেছে। একে সমাজের নানা মহল থেকে সাধুবাদ দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে এক সাংবাদিক বলেন, বিএনপি এই অভিযানকে বলছে আইওয়াশ। মূল অপরাধীদের আড়াল করার জন্য সরকার এটা করছে। এর জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আইওয়াশ করতে যাব কেন? আমি তো আমার আপন-পর কিছু দেখিনি। যারাই অপরাধ জগতের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদেরই ধরা হচ্ছে। তাহলে আইওয়াশ বলে কী করে?’ তিনি বলেন, ‘আইওয়াশের ব্যবসা বিএনপিই ভালো জানে-বোঝে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, দেশটাকে দুর্নীতিতে নিয়ে এসেছে তো বিএনপি। দুর্নীতিকে ‘নীতি’তে নিয়ে এসেছে তারা।’ এ সময় জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে কীভাবে মানি লন্ডারিং কালচার, ঋণখেলাপি, ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া, শিক্ষাঙ্গনে অস্ত্রের ঝনঝনানি শুরু করেন, সে সবের ফিরিস্তি দেন সরকারপ্রধান। শেখ হাসিনা বলেন, এরপর এরশাদ ক্ষমতায় এলেন। তিনি আরেক ধাপ ওপরে। আর খালেদা জিয়া তো দোকানই খুলে বসলেন। একদিকে হাওয়া ভবন, অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে এমন কিছু করেনি দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলমান শুদ্ধি অভিযান আইওয়াশ নাকি অন্য কিছু, অপেক্ষা করুন দেখতে পাবেন। তার জয়ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায় সম্প্রতি বরিশালে গিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির এক অনুষ্ঠানে একাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। এই মন্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। এরপরও আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জোট ১৪ দল তার বক্তব্যে সন্তুষ্ট হওয়ায় এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এক সাংবাদিক। তার জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললে ১৪ দলীয় জোটের ওই নেতাও বিতর্কিত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আমাদের জোটের নেতা প্রশ্ন তুলেছেন, তার মনে তো কষ্ট থাকতেই পারে। তিনি নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললে, তিনিও তো বিতর্কিত হয়ে যান। এ বিষয়ে জোটের মুখপাত্র নাসিম সাহেব আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে আমি বলেছি, এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণ যদি ভোট না দিত, আমাদের পক্ষে না থাকত, তাহলে আমাদের সমর্থন থাকত না। তাদের (বিএনপি) ভোটবিহীন নির্বাচনের বিরুদ্ধে আমরা গণআন্দোলন গড়ে তুলতে পেরেছিলাম। আমাদের জনসমর্থন ছিল। এবারের নির্বাচনের পর জনগণ, ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের মানুষ আমাদের সমর্থন দিয়েছেন। শুধু আওয়ামী লীগের না, বিএনপির ব্যবসায়ীরাও আমাদের সমর্থন দিয়েছেন। কারণ আমরা সবার কাজ করার সুযোগ করে দিতে পেরেছি।’ পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ॥ সময় বলা যাবে না মুজিববর্ষে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা যাবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের কোনো সুনির্দিষ্ট সময় বলা যাবে না। পদ্মা সেতুর পুরো প্রক্রিয়াটাই হাইলি-টেকনিক্যাল বিষয়। সেতুর নিচের অংশে ট্রেন, ওপরে অংশে গাড়ি চলবে। এটার টেকনোলজিটাই ভিন্ন।’ এছাড়া নদীর চরিত্রও একটা বড় ব্যাপার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পদ্মা সবচেয়ে খরস্রোতা নদী। একটা বর্ষার পরেই নদীর চরিত্র বদলায়। পলি পড়ে। গতিপথ পরিবর্তন হয়। এসব কারণে অনেকদিন কাজ বন্ধও রাখতে হয়েছিল। তাই পদ্মা সেতুর কাজ শেষ করার বিষয়টি অনেক কিছুর ওপরও নির্ভর করে।’ মুজিব বর্ষের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব কিনা- এমন আরেকটি প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা চলছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে চিঠিও দিয়েছিলাম এ ব্যাপারে। নূর আছে কানাডায়, তার ব্যাপারেও কানাডা সরকারের সঙ্গে কথা চলছে। ট্রডোর (কানাডার প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গেও কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন- ব্যক্তিগতভাবে তিনিও এ রকম নৃশংস ঘটনার বিচার চান। কিন্তু তাদের দেশের আদালতের কিছু নিয়মের কারণে প্রতিবন্ধকতা আছে। বিশ্বের অনেক দেশই এখন মৃত্যুদন্ড রহিত করেছে। যেহেতু তারা (খুনিরা) মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত, তাই সেই ছুতোয় তারা দেশে না ফেরার কৌশল অবলম্বন করছে।’ নুসরাত জবানবন্দি দেয়ায় বিচারে সুবিধা হয়েছে ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির হত্যার বিস্তারিত তথ্য বের করে আনায় সাংবাদিকদের ধন্যবাদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মৃত্যুর আগে নুসরাত নিজের জবানবন্দি দিতে পারায় বিচারে সুবিধা হয়েছে তিনি বলেন, নুসরাত হত্যার বিস্তারিত তথ্য বের করে আনতে সাংবাদিকদের যথেষ্ট ভূমিকা ছিল। নুসরাত জীবন দিয়ে গেছে। কিন্তু সে একটা সাহসী ভূমিকা রেখে গেছে। দুর্নীতির জন্য গ্রেপ্তারদের কোনো বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা কারাগারে আছে, সেটা কি বিচার হয়নি? বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, মৃত্যুর আগে নুসরাত নিজের জবানবন্দি দিতে পারায় বিচারে সুবিধা হয়েছে। তার জবানবন্দি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া তার হত্যার বিচারে ব্যাপক জনমতও তৈরি হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী কলকাতা যাবেন এবার ক্রিকেট দলের ভারত সফরে কলকাতায় টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। এই টেস্ট দেখার জন্য ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডেও (বিসিসিআই) প্রধান সৌরভ গাংগুলী আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। গত মঙ্গলবার গণভবনে তার সংবাদ সম্মেলনে উঠল সে প্রসঙ্গ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দাওয়াত নয়। বাঙালি ছেলে সৌরভের দাওয়াত। সৌরভের দাওয়াত বলেই আমি সেখানে যাব। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকব। বিকালে চলে আসব।’ বিসিসিআইয়ের প্রধান হওয়ার পর সৌরভের ফোন পান প্রধানমন্ত্রী। এটি তিনি নিজেই জানিয়ে বলেন, ‘সৌরভ বাঙালি ছেলে। সে এক সময় ক্রিকেটে খুব নাম করেছিল। এই প্রথম একজন বাঙালি হিসেবে বিসিসিআইয়ের প্রধান হলো। এরপর সে আমাকে ফোন করেছিল। আমাকে দাওয়াত দিল। বলল, আমি যেন ওখানে যাই এবং খেলার শুরুতে অন্তত থাকি। আমি রাজি হয়ে গেলাম।’ কলকাতা টেস্ট উপলক্ষে তিস্তা চুক্তি নিয়ে কোনো ‘ক্রিকেট কূটনীতি’ থাকবে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে কিছুটা রসিকতা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটকে নদীর মধ্যে নিয়ে যাচ্ছেন কেন?