ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবড়িয়ার কসবায় যৌতুক লোভী শ্বশুড়-শ্বাশুড়ীর অমানবিক শারিরীক নির্যাতনের শিকার হয়ে সুমাইয়া আক্তার (২১) নামে এক গৃহবধু এখন হাসপাতালে। এ ঘটনায় গৃহবধুর পিতা বাদি হয়ে কসবা থানায় ৪ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। গৃহবধু সুমাইয়া আক্তার উপজেলার পৌর এলাকার আড়াইবাড়ি গ্রামের মো. নাছির উদ্দিনের মেয়ে এবং একই গ্রামের মো.শরীফ উদ্দিনের পুত্রবধূ। বর্তমানে সুমাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়; গত ৫ বছর পূর্বে উপজেলার আড়াইবাড়ী গ্রামের মো. নাছির উদ্দিনের একমাত্র মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে একই গ্রামের মো. শরীফ উদ্দিনের ছেলে সিফাত উদ্দিনের সাথে। বিয়ের পর এক বছরের মতো ভালো থাকে। কিন্তু এক বছর পরই তাদের স্বরূপ ভেসে উঠে। বাপের বাড়ি থেকে যৌতুক বাবদ টাকা আনার জন্য শুরু হয় যৌতুকলোভী শ্বশুর-শ্বাশুড়ীর অমানবিক নির্যাতন। কয়েকবার বাবার বাড়ি থেকে তাদের টাকা এনেও দেয় গৃহবধু সুমাইয়া। তাতেও তাদের মন ভরেনা। কিছুদিন পর পর তাকে নির্যাতন করে বাবার বাড়ি থেকে টাকা পয়সা আনার জন্য। আনতে না পারলে তার উপর নেমে আসে শারিরীক ও মানুষিক নির্যাতন। সুমাইয়ার শ্বশুর বাড়িতে দালান তৈরীর সময় বাবার বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা ধার আনতে বললে সুমাইয়ার বাবা নাছির উদ্দিন একমাত্র মেয়ের সুখের চিন্তুা করে জামাইকে ৫লাখ ধার দেন। ৬ মাস পর ফেরত দেয়ার কথা বলে আনলেও প্রায় ২ বছর পেরিয়ে যায়। এই টাকা ফেরত চাইলেই শ্বশুর-শ্বাশুড়ী ক্ষিপ্ত হয়ে সুমাইয়ার উপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। সাথে যুক্ত হয় দুই ননদ আইরিন বেগম ও তপা আক্তার। ওই টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে গত ৩০ মার্চ সুমাইয়ার উপর আরো শুরু হয় শারিরীক নির্যাতন। শ্বশুড়-শ্বাশুড়ী ও দুই ননদ এক পর্যায়ে তাকে গলা চেপে ধরে মেরে ফেলার জন্য। কোনো রকমে তাদের হাত থেকে প্রাণে বেঁচে সুমাইয়া দৌড়ে চলে যায় রাস্তার উপর। তার আর্তচিৎকারে প্রতিবেশিরা খবর দেয় তার বাবার বাড়িতে। পরে তার বাবা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সুমাইয়ার ছোট দুইটি জমজ শিশুকেও তারা আটকে রেখেছে। আসতে দিচ্ছেনা মায়ের কাছে।
এবিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন সোমাইয়ার বাবা নাছির উদ্দিন। তিনি বলেন, নানা রকম প্রতিরোধের মুখে মামলা করলেও এখনো আসামীদের গ্রেফতার করেনি পুলিশ। আমার মেয়ের সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে এখন হাসপাতালে কাতরাছে।
কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি, তারিখ:- ০১-০৪-২০২৫।