প্রশান্তি ডেক্স॥ পটুয়াখালীর বাউফলে হোম কোয়ারেন্টাইনের কথা বলায় দলবল নিয়ে পুলিশকে পেটালেন আশ্রাফ আহমেদ নামে এক ছাত্রলীগ নেতা। রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিতে নিষেধ করায় দুই পুলিশ এ নির্যাতনের শিকার হন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় উপজেলার বগা ইউনিয়নের কৈখালী গ্রামের (নাজিরের বাধ) তিন রাস্তার মোড়ে এ ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে, পুলিশ পেটানো ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম আশ্রাফ আহমেদ। তিনি বগা ইউপি ছাত্রলীগের সভাপতি (এমপি গ্রুপ)। এ ঘটনায় গত শুক্রবার আশ্রাফকে আটক করেছে পুলিশ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলমান করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকার গণসমাগমে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বগা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মহিবুল্লা ও এসআই মাধব চন্দ্র দে গত বৃহস্পতিবার উপজেলার বগা ইউনিয়নের কৈখালী বাজারে গণসমাগোম প্রতিরোধে জন সচেতনতামূলক মাইকিং করে। পরে বাগা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে আসার পথে বানাজোরা (নাজিরের বাধ) তিন রাস্তার মোড়ে ১৫-২০ জন যুবককে একত্রিত হয়ে আড্ডা দিতে দেখে। এ সময় ওই যুবকদের আড্ডা থেকে সরে যেতে বললে আশ্রাফ ক্ষিপ্ত হয়ে বলে, ‘শ্যালা তোদেরকেই খুঁজছি। এই শ্যালোগো ধর’ বলেই আশ্রাফের নেতৃত্বে যুবকেরা কিলঘুষি মারতে থাকে। কেউ কেউ লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। এ সময় তাদের সাথে থাকা অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে পুলিশ তাদের সহকর্মীদের ফোন করলে আশ্রাফ ও তার সঙ্গীরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে অন্য পুলিশ সদস্যরা এসে আহত পুলিশদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বাউফল হাসপাতালে ভর্তি করে।এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে আশ্রাফ আহমেদ (৩৫), সাইফুল (৩৩) ও আসাদুল (৩৩) সহ অজ্ঞাতনামা ৮-১০ জনের নামে মামলা করে। আজ গত শুক্রবার সকালে সাড়ে ১১ টায় বাউফল পৌর এলাকা থেকে আশ্রাফ আহমেদকে পুলিশ গ্রেফতার করেন।এ ব্যাপারে বগা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মহিবুল্লা জানান, গত এসএসসি পরিক্ষায় ওই ছাত্রলীগ নেতার এক নিকটতম শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়ায় অনৈতিক সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ায় তখন থেকেই আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়।উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন থেকে একাধিক ব্যক্তিকে লাঞ্ছিত করা, বিভিন্ন রকমের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা, বিভিন্ন স্কুল কলেজ পড়ুয়া মেয়েদের নানান ধরনের কর্মকান্ডের ভিডিও ধারণ করে অনৈতিক সুবিধা নেয়া, এলাকায় চাঁদাবাজীসহ নানান ধরনের অপকমের সাথে লিপ্ত থাকার অভিযোগ আছে আশ্রাফের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহামুদ রাহাত জামসেদ বলেন, আশ্রাফ ছাত্রলীগের কেউ নয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় এমপি আসম ফিরোজের ব্যক্তিগত কমিটির লোক হতে পারে। পুলিশের উপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষিদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি করছি। এ ব্যাপারে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। বাউফল পৌর এলাকা থেকে আশ্রাফকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।