প্রাথমিকের শিক্ষক বদলি নিয়ে অধিদপ্তরের নতুন বার্তা

প্রশান্তি ডেক্স॥ করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৯ মার্চ থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। শিক্ষকদের লিখিত আবেদনের (হার্ডকপি) বিপরীতে বদলি কার্যক্রম সরকারি ছুটির পর শুরু হবে। অন্যদিকে এপ্রিলের পর থেকে অনলাইনে সারা বছরই চলবে শিক্ষক বদলির কাজ। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সাল থেকে অনলাইনে ভতির কার্যক্রম শুরু করার জন্য এ বছর ফেব্রুয়ারিতে জরুরি বদলি ছাড়া সহকারী শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম চলেনি। তবে অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম চালু করা না গেলে মাচের শেষ সপ্তাহ থেকে লিখিত আবেদনের বদলি কার্যক্রম শুরু করার কথা ছিল। করোনাভাইরাস প্রকোপের কারণে তাও আটকে গেছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ্ বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। তবে কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়ে গেছে। ভাইরাসের সমস্যাটা না থাকলে মাচের প্রথম সপ্তাহ থেকেই আমরা বদলি শুরু করতে পারতাম। শিক্ষকদের আশ্বস্ত করতে চাই, ছুটির পরপরই শিক্ষক বদলি কার্যক্রম (লিখিত আবেদনের বিপরীতে) শুরু করবো। এখন সবার চাওয়া, যেন দ্রুত এ দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে পারি। মহাপরিচালক বলেন, ‘ইতিমধ্যে বেশ কিছু শিক্ষকদের আবেদন যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত করে রাখা হয়েছে। বদলি কার্যক্রম শুরু হলে নির্দেশনা জারি করা হবে। আগে শিক্ষক বদলি নিয়ে অনেক অভিযোগের কথা শুনেছি। শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ করবো, তারা যেন প্রতারণার শিকার না হন। বদলি কার্যক্রমে দুর্নীতির কোনো সুযোগ নেই। আশা করছি, করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে ছুটি না বাড়লে অনলাইনের মাধ্যমে এপ্রিলের মধ্যেই বদলি কার্যক্রম চূড়ান্ত হবে। বদলির নতুন সফটওয়্যারে শিক্ষক ডেটাবেজ আপডেট করে ফেলবো, এতে কোনও সমস্যা হবে না। মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৮ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ এবং পরে বাড়িয়ে আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরের দুইদিন ১০ ও ১১ এপ্রিল শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি সরকারি ছুটি হিসেবে গণ্য হয়েছে। ফলে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকবে। এই ছুটি দীর্ঘায়িত না হলে সব ধরনের অফিস কার্যক্রম শুরু হবে ১২ এপ্রিল থেকে। এসময় শুরু হবে প্রাথমিকের শিক্ষক বদলি কার্যক্রমও। মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বদলি কার্যক্রম জানুয়ারিতে শুরু হয়ে চলে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। এ সময় শিক্ষা অধিদপ্তরের এক শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে যোগসাজস করে দালালরা শিক্ষকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে অধিদফতরের দুই-একজন কর্মকর্তা এবং নিচের স্তরের কর্মচারীদের বিররুদ্ধ। অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আগে থেকেই অনলাইনে শিক্ষক বদলির উদ্যোগ নেয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন জানিয়েছিলেন, জানুয়ারি (২০২০) থেকে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষক বদলি কার্যক্রম শুরু করা হবে। যদিও এখনও তা শুরু করা যায়নি।অন্যান্য বছরের মতো এবারও যথা সময়ে সহকারী শিক্ষকদের বদলি আবেদন জমা নেওয়া হলেও বর্তমান করোনাভাইরাসের কারণে সকল বদলি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এ কারণে বদলিপ্রত্যাশী আবেদনকারী শিক্ষকরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.