শরীয়তপুরে করোনা ঝুঁকিতে পাশে নেই জন…প্রতিনিধিরা

প্রশান্তি ডেক্স॥ শরীয়তপুর জেলার অন্তত দেড় লাখ মানুষ প্রবাসে থাকেন। তাঁদের অধিকাংশ ইতালিতে বসবাস করেন। এর মধ্যে নড়িয়া উপজেলায় প্রবাসীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৬০ শতাংশ। আর সদর, ডামুড্যা, গোসাইরহাট, জাজিরা ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা মিলে বাকি ৪০ শতাংশ প্রবাসে থাকেন।করোনা ভাইরাসে দেশজুড়ে চলছে অঘোষিত লকডাউন। স্তব্ধ হয়ে পড়েছে পুরো দেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল। স্থবির হয়ে পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য ও সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্ম। ঘরে বন্দি হয়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে শরীয়তপুর জেলার মানুষ। এমন ভয়াবহ অবস্থায় শ্রমজীবী মানুষের পাশে নেই স্থানীয় এমপি এবং একাধিক জনপ্রতিনিধিরা। তারা করোনা আতঙ্কে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকা ছেড়েছেন। অনেক ইউপি চেয়ারম্যানরাও আবার ঢাকায় বসে মোবাইল ফোনে দায়সারা দায়িত্ব পালন করছেন। অনেকে জন-প্রতিনিধিকে এলাকায় দেখা না গেলেও ঢাকায় বসে নির্বাচিত এলাকাতে কিছু মাস্ক ও স্যানিটাইজার পাঠিয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আলোচনায় আছেন। অথচ প্রতিটি এলাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে কাজ করছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে যার সবার আগে এগিয়ে আসার কথা তারাই নির্বাচনী এলাকা ছেড়ে অন্য জায়গায় অবস্থান করছেন। করোনার প্রকোপে তাদের এমন আচরণে প্রশ্ন উঠেছে জনমনে।করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় দেশজুড়ে গত ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশের সব দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যানচলাচল, অফিস-আদালত এবং জনসমাগম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সরকারের অঘোষিত লকডাউনের সিদ্ধান্ত আসার পর পর এলাকায় দেখা মেলেনি শরীয়তপুরের ৩টি আসনের এক সাংসদকেও। যদিও ঘরবন্দি হয়ে পড়া শ্রমজীবী মানুষের খোঁজখবর নিয়েছেন কর্মী বাহিনীর মাধ্যমে। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ রাজনৈতিক দলের অনেক নেতাকর্মীরা। তবে স্থানীয় প্রশাসন, আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন সংগঠনগুলো ভাইরাস প্রতিরোধ সামগ্রী ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অব্যহত রেখেছেন। করোনা ঝুঁকি থাকায় ঘরে বন্দি রয়েছেন জেলার সকল শ্রেণিপেশার মানুষ। এমন অবস্থায় গত রোববার (২৯ মার্চ) এলাকায় এসেছেন শরীয়তপুর-২ আসনের সাংসদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম। তিনি এলাকায় প্রায় সাড়ে ১২ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেন। এছাড়া গত সোমবার (৩০ মার্চ) রাতে নির্বাচনী এলাকায় এসেছেন শরীয়তপুর-১ আসনের এমপি ইকবাল হোসেন অপু। তবে এখনও এলাকায় দেখা যায়নি শরীয়তপুর-৩ আসনের এমপি নাহিম রাজ্জাককে। গত মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) গণভবন থেকে ৬৪ জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এতে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে যোগ দেন পানি সম্পদ উপ-মন্ত্রী একে এম এনামুল হক শামীম, তার সাথে ছিলেন শরীয়তপুর-১ আসনের এমপি ইকবাল হোসেন অপু। অন্যদিকে, শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক এখনও নির্বাচনী এলাকায় না এলেও শ্রমজীবী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকারি-বেসরকারি ও সামাজিক সংগঠনগুলো। তারা নিজ নিজ উদ্যোগে চাল-ডালসহ নিত্যপণ্য বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশে করোনাভাইরাস দেখা দেয়। প্রাণঘাতী ভাইরাসটি দেখা দেয়ার পর থেকে লিফলেট বিতরণসহ জনসচেনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে শরীয়তপুরের প্রশাসন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.