প্রশান্তি ডেক্স ॥ জন প্রশাসন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিযে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ৭৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে রাজধানীতে একজনতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। গোলাম মোস্তফা (৩৮) নামে ওই ব্যক্তিকে রোববার রাতে উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সিআইডির কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার সুমন রেজা জানান, প্রাথমিকভাবে তার বাড়ি কুড়িগ্রাম বলে জানা গেছে। তারা দুই ভাই এক বোন, তাদের বাবা স্কুলশিক্ষক ছিলেন। যেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেটা তার ভাড়া করা ফ্ল্যাট। প্রতারণার মাধ্যমে টাকা জোগাড় করে তার বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা ছিল। সিআইডির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোলাম মোস্তফা নিজেকে ২৪তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে কখনো সচিবালয়ে কর্মরত উপসচিব, কখনো ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিতেন। তার মূল টার্গেট ছিল বিত্তবান পরিবারের অবিবাহিত ও চাকুরীজীবী কন্যা। ঢাকা শহরের কিছু অসাধু ঘটকের কাছ থেকে অবিবাহিত মেয়েদের বায়োডাটা টাকার বিনিময়ে সংগ্রহ করে তাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ শুরু করেন গোলাম মোস্তফা। এরপর পরিবারের সদস্য বিশেষত পাত্রীর মায়ের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন এবং বিশ্বস্ততা অর্জন করেন। ভাল ছেলের সাথে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার কথা ভেবে সরল বিশ্বাসে প্রতারকের সকল কথা মেনে নিতো বিবাহযোগ্য মেয়ের মা। আর এই সুযোগটি নিতো প্রতারক মোস্তফা। ফলে কখনো পিএইচডি করতে বিদেশ যাওয়া, বদলি বাতিল করা বা দুদকে সমস্যা হয়েছে এই কথা বলে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা টাকা ধার নিতেন। পরবর্তীতে ধারকৃত টাকা ফেরত না দিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিতেন। এভাবে পাঁচ জনের কাছ থেকে ৭৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর তাদের একজন বেসরকারি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা সম্প্রতি ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করলে সিআইডি তদন্ত শুরু করে। মামলার তদন্ত সিআইডি অধিগ্রহণ করে। সিরিয়াস ক্রাইম স্কোয়াডের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজীব ফারহানের তত্ত্বাবধানে সহকারী পুলিশ সুপার মো. সুমন রেজার নেতৃত্বে একটি টিম রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে উত্তরা ১১নং সেক্টরের একটি অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। মালাটি সিআইডির তদন্তাধীন রয়েছে। সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজীব ফারহান বলেন, ডিগ্রি পাশ এই প্রতারকের বাড়ি কুড়িগ্রামে। সেখানে তার স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। অথচ নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে এখন পর্যন্ত চারজনকে বিয়ে করার তথ্য দিয়েছে। আরও তথ্য আদায়ের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে মঙ্গলবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে।