প্রশান্তি ডেক্স ॥ নওগাঁয় এবারের বন্যার পানিতে ৫৬৩টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে করে জেলার কয়েকটি উপজেলার ৩১৮ জন মাছচাষী ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছে। অধিকাংশ মাছচাষীরা বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করে। তাই এবারের দুই দফা বন্যা সব কিছু শেষ করে দিয়েছে মাছচাষীদের। পুকুরের মাছ হারিয়ে এখন তারা চোষে সরষের ফুল দেখছে। এবারের বন্যায় জেলার আত্রাই উপজেলার পুকুরের মাছ সবচেয়ে বেশি পানিতে ভেসে গেছে। এই উপজেলার ৩০৭টি পুকুর থেকে ২১ কোটি টাকা মূল্যের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার আত্রাই উপজেলা উত্তরবঙ্গের মৎস্যভান্ডার হিসেবে পরিচিত। এই উপজেলায় উৎপাদিত মাছের সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে। সম্প্রতি হয়ে যাওয়া দুই দফায় বন্যায় আত্রাই উপজেলার ৩০৭টি পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। নওগাঁ সদর উপজেলার ১৩৪টি পুকুর থেকে ২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা মূল্যের মাছ, মান্দা উপজেলার ৭০টি পুকুর থেকে ৫১ লাখ টাকা মূল্যের মাছ, পোরশা উপজেলার ২০টি পুকুর থেকে ৩০ লাখ টাকা মূল্যের ও রাণীনগর উপজেলার ৩২টি পুকুর থেকে ১৫ লাখ ৭৪ হাজার টাকা মূল্যের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এতে করে জেলায় বন্যার পানিতে ২৫ কোটি ৫ লাখ ২৪ হাজার টাকার মাছ ভেসে গেছে।

জেলার রাণীনগর উপজেলার কাটরাশইন গ্রামের মাছচাষী মন্টু সিপাই বলেন, নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে হঠাৎ করেই পানি প্রবেশ করে আমার পুকুরের মাছ সব পানিতে ভেসে গেছে। মাছের সঙ্গে সঙ্গে ভেসে গেছে আমার সবকিছু। কারণ এই পুকুরের মাছই ছিলো আমার শেষ সম্বল। আমি ঋণ নিয়ে পুকুরে মাছ চাষ করেছিলাম। ভেবেছিলাম কিছুদিন পর মাছ বিক্রি করে ঋণগুলো পরিশোধ করবো। কিন্তু তা আর হলো না। এখন আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। তাই যে সব মাছ চাষীরা ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছে সেই সব চাষীদের যদি সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক ভাবে সহায়তা করা কিংবা ভুর্তকি না দেয়া হয় তাহলে মাছচাষীদের পরিবার-পরিজন নিয়ে পথে বসতে হবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেন জানান, বন্যায় যে সব মাছ চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছেন তাদের একটি তালিকা তৈরি করেছি। সেই তালিকাটি সরকারের কাছে পাঠিয়ে দিবো। পরবর্তিতে যদি ক্ষতিগ্রস্থ্য মাছচাষীদের জন্য আর্থিক ভাবে কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা আসে তাহলে সেগুলো মাছচাষীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।