‘সারাদেশ ধর্ষকের বিরুদ্ধে সরব, প্রধানমন্ত্রী নীরব কেন?’

প্রশান্তি ডেক্স ॥ “ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন যখন সরকারবিরোধী রূপ নেয় তখনতো পুলিশ বাধা দেবেই,” এ মন্তব্য এক পাঠকের। ধর্ষণ ও নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতায় অপরাধীদের শাস্তি বিষয়ে ফেসবুক পাতায় অনেকেই সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

নোয়াখালীর জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে বিবস্ত্র করে নারীকে নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিও করে তা ইন্টারনেটে আপলোড করার পেছনে ‘ষড়যন্ত্র থাকতে পারে’ বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মন্তব্য প্রসঙ্গে পাঠক রায়ান রশিদ খান বলেছেন, “সরকার তো সবকিছুতেই ষড়যন্ত্রের গন্ধ পায়।” তার সঙ্গে একমত পাঠক নাজিম মুহাম্মদও।

মোশারফ হোসেন লিখেছেন, “ষড়যন্ত্র হোক আর যা-ই হোক নির্যাতন তো করা হয়েছে। সুতরাং এটা একটা অপরাধ। সবচেয়ে বড় অপরাধ সবকিছুকেই রাজনৈতিক রং দেওয়া।”

শাহ জামাল হায়দার ধর্ষকের বিচার দাবি করেছেন। পাঠক অপু ভৌমিকসহ অনেকেরই এই দাবি। ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে পুলিশের মুখোমুখি ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভকারীরা। ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে মঙ্গলবার ১২টার দিকে শাহবাগে জাদুঘরের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা। এরপর তাদের সঙ্গে যোগ দেন প্রগতিশীল বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মী, লেখক, কবি, শিল্পী, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও নারী অধিকারকর্মীরা।

তবে পাঠক মুশফিকুর রহমান মনে করেন, সরকার চাইলে ধর্ষণ বন্ধ করতে পারে। উদাহরণ হিসেবে তিনি অ্যাসিড নিক্ষেপের প্রসঙ্গ তুলে ধরে লিখেছেন, “বাংলাদেশে অ্যাসিড নিক্ষেপ যখন অনেক বেড়ে গিয়েছিল, সে সময়ের (এরশাদ) সরকার তা কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে।”

এদিকে পাঠক শাহ আনিস সংবাদ মাধ্যম ও জনগণের প্রশংসা করে লিখেছেন, “ধর্ষণের এত ঘটনা সামনে আসার পর বোঝা গেল বাংলাদেশে মিডিয়া স্ট্রং হচ্ছে আর জনগণ ভয়, লজ্জা না পেয়ে রিপোর্ট করছে।” পাঠক আনিসের মন্তব্যের নীচে আহমেদ জুয়েল অবশ্য লিখেছেন, “ধর্ষণের খবর যাতে প্রচার না হয় সেজন্য সংবাদ মাধ্যমের উপর কড়াকড়ি শুরু হয়ে যাবে।”

পাঠক মনিরুল ইসলাম লিখেছেন, “ধর্ষকের বিচারের কাঠগড়ায় এই নরপশুদের পক্ষেও যুক্তি আসবে। ভিক্টিমকে কটুভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করবে ধর্ষকের আইনজীবী। মেয়েটাও বর্ণনা দেবে লজ্জায় মরতে মরতে। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, এমনকি বছর গড়িয়ে গেলেও বিচার কার্যকর হবে না। এখন পর্যন্ত একটা বিচারও কর্যকর হয়নি।”

মাহমুদুল হাসান আলম মনে করেন, “পুলিশ যদি এভাবে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনকে বাধা দিতে থাকে, তাহলে বাংলাদেশে পুলিশ ধর্ষকদের পক্ষে- এ কথাটাই সুপ্রতিষ্ঠিত হবে।”

“ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন যখন সরকারবিরোধী রূপ নেয় তখন তো পুলিশ বাধা দিবেই,” এই মন্তব্য সাগর সরদারের। সৈয়দ আবুবকরের প্রশ্ন, “সারাদেশ আজ ধর্ষকের বিরুদ্ধে সরব, প্রধানমন্ত্রী নীরব কেন?”

তবে শাহনেওয়াজ সমালোচনামূলক মন্তব্য না করে দেখিয়েছেন ধর্ষণ এবং নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করার উপায়। তার মতে, “পাড়াভিত্তিক সাংস্কৃতিক চর্চা, লাইব্রেরি সংস্কৃতির জাগরণ, খেলাধুলা, সিনেমা, চিত্তবিনোদনের মাধ্যমে সুস্থ সামাজিক বিকাশের পরিকল্পিত বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে ধর্ষণ বন্ধ করা সম্ভব।” সূত্র: ডয়েচে ভেলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.