প্রশান্তি ডেক্স ॥ দুর্নীতি ও লুটপাটের দায়ে নির্বাচন কমিশন জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ‘নৈতিক অধিকার হারিয়েছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের পদত্যাগ দাবি করে তারা বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন শুধু তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দেয়নি, তারা নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, অসদাচরণ ও নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছে যা ইতিমধ্যে সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। সুপ্রিম জুুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করে নির্বাচন কমিশনের অনিয়ম, দুর্নীতির তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন তারা। গত নির্বাচন কমিশন ঘেরাও কর্মসূচি থেকে তারা এ অভিযোগ করেন। ১১টার পর রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করতে যান বাম জোটের নেতা-কর্মীরা। কিন্তু পরিবেশ অধিদফতরের সামনে পুলিশ আটকে দেয়। পরে সেখানেই তারা সমাবেশ করেন। বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফি রতন বলেন, হুদা কমিশন দিনের ভোট রাতে আয়োজন করে, ভোট ডাকাতির নির্বাচন আয়োজন করে এ (আওয়ামী লীগ) সরকারকে আবারও ক্ষমতায় এনেছে। জাতীয় নির্বাচনকে কলঙ্কিত করে নির্বাচন কমিশন এখনো লজ্জাহীনভাবে তাদের পদ আঁকড়ে ধরে বসে আছে। এই নির্বাচন কমিশন তাদের পদে থাকার সব অধিকার হারিয়েছে। তাদের অবিলম্বে পদদ্যাগ করতে হবে। গত ১৯ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থসংশ্লিষ্ট গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগ তুলে এর তদন্ত করতে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেন ৪২ জন নাগরিক। ক্বাফি রতন বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে আহ্বান জানাই আপনি আপনার সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করে এ নির্বাচন কমিশনের ভোট ডাকাতি আর তাদের দুর্নীতির তদন্তÍ করুন। আবদুল্লাহ ক্বাফি রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সিপিবি সম্পাদক আহসান হাবীব লাবলু, বাসদ নেতা খালেকুজ্জামান লিপন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য আকবর খান, বাসদ (মার্কসবাদী)-এর আ ক ম জহিরুল ইসলাম, ইউসিএলবির নজরুল ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা শহীদুল ইসলাম সবুজ। বক্তারা বলেন, এ কমিশন নৈতিকভাবে স্খলিত। এরা ইতিমধ্যে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনায় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এরা ক্ষমতাসীনদের হয়ে ভোট ডাকাতির নির্বাচন আয়োজন করেছে। এ কমিশনের আর কোনো নির্বাচন পরিচালনার বৈধ নৈতিক কর্তৃত্ব অবশিষ্ট নেই। তারা সিইসি ও নির্বাচন কমিশনদের অবিলম্বে পদত্যাগের আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, এ নির্বাচন কমিশন এখন আর রাষ্ট্রের অধীনে নেই, তারা কতিপয় গুন্ডাপান্ডার অধীনে চলে গেছে। তাদের ধরিয়ে দেওয়া তালিকা দেখেই নির্বাচন কমিশন বিজয়ী প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করছে। নির্বাচন কমিশন ভেবেছে তারা আজীবন ক্ষমতায় থাকতে পারবে। কিন্তু তা নয়। জনগণ গলায় গামছা দিয়ে তাদের রাজপথে নিয়ে আসবে।