’২১এর বিদায়ে জন্ম হলো ’২২

বিদায়ের শেষলগ্নে এসে ২০২১কে সাধুবাদ জানাই এবং শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। কারণ এই ’২১শেই অনেক চড়াই উৎরাই পার হয়ে জীবনের কাঠঘরাই দাঁড়িয়ে প্রাণের ও দেহের সমন্বয়ে-ই আগামীর সম্বাবনার দ্বারে প্রবেশের শুভক্ষণে ২০২২কে স্বাগতম জানিয়ে; জীবনে, পরিবারে এবং সমাজে ও দেশে দেশে রঙ্গিন আবরণে শান্তির বাতায়নে বরণ করে নিচ্ছি। ২০২১এর শিক্ষায় ২০২২ স্বার্থক হউক আমাদের জীবনের সকল ক্ষেত্রে পরিপূর্ণতা দিয়ে । আগামীর ’২২কে স্বাগত জানিয়ে নাকে তেল দিয়ে না ঘুমিয়ে সজাগ থেকে “যা সত্য, যা উপযুক্ত, যা সৎ, যা খাঁটি, যা সুন্দর যা সম্মান পাবার যোগ্য, মোট কথা যা ভাল এবং প্রশংসার যোগ্য সেইদিকে তোমরা মন দাও।” সত্য ও সুন্দরকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আকড়ে ধরে শান্তি ও নিশ্চয়তা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে আর নিশ্চিত নিরাপত্তা বলয়ে আগামীর ইতিবাচক আশাকে পুজি করে জীবন সংগ্রামের প্রতিটি মুহুত্বকে অর্জনের মাধ্যমে ইতিবাচক জয় সুনিশ্চিত করতে হবে।
২০২১এর সকল বি:শ্বাদ ভুলে গিয়ে স্মৃতির আঙ্গিনায় নতুন ইতিবাচক স্পর্শ অনুভব করিয়ে আগামীর যাত্রা শুভ করতে হবে। ’২১ এর শুভস্মৃতিগুলোকে পুজি করে আগামীর কল্যাণের তরে এগিয়ে যাব। পুরোনো সকল গ্লানিগুলোকে স্মৃতি থেকে মুছে ফেলে ভুল ভেবে জীবনের নতুন গতি সঞ্চারে কাজ করার মানুষিকতাকে শক্তিশালি করতে সকল প্রতিকুলতা এবং প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলার দু:সহ স্মৃতি মনে করে আগামীর সকল কিছু অর্জনে চেষ্টা চালিয়ে যাব। ষড়যন্ত্র যে ক্ষতি করেছে আর যে ক্ষতি করবে তার সকল ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করার মানুষিক শক্তি সঞ্চয়ে সার্বজনীন ঐক্য সুপ্রতিষ্ঠিত করব। দেশ ও বিদেশের চক্রান্তকে অতিমারি হিসেবে গণ্য করে আগামীর প্রস্তুতিকে সুদূঢ় করে সামনে এগিয়ে যাব। পুরাতনের মনোকষ্ট ভুলে গিয়ে ভাল কিছুর প্রত্যাশায় নতুনকে ইতিবাচক আঙ্গিকে সাজিয়ে তুলে সামনে এগিয়ে যাব। পুরোনো ভাবনাসকল পিছনে ফেলে নতুনকে আলিঙ্গনের সর্বাত্মক ইচ্ছা ও আকাঙ্খাকে সার্বিক কল্যাণের তরে মনোবলে পূর্ণ হয়ে দেশবাসিকে নিয়ে এগিয়ে যাব। এই মনোবাসনা ও কামনা পরিপূর্ণ করার লক্ষ্যে ঘৃণা, লোভ, জাগতিক এবং শারীরিক ও মানুষিক সকল নেতিবাচকতা এবং পাপ দূরীকরণার্থে সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায়ে নিয়োজিত থাকতে হবে।
কবুতরের মত সরল হও এবং সাপের মত সতর্ক থাকার মনেবৃত্তি কায়মনোবাক্যে স্থীর রেখে আগামীর সকল কর্মকান্ডে ধীরস্থির হয়ে এগিয়ে যেতে হবে। শয়তান ছিল; আছে এবং থাকবে আর একমাত্র শয়তানেরই শেষ বিচারের ফয়সালা সম্পন্ন হয়েছে। তাই স্বল্প পরিসরের পৃথীবির আয়ুস্কাল পূর্ণ হওয়ার সাথেই সাথেই শয়তানের শাস্তি বা পাপভোগের সকল স্থিরিকৃত বিষয়ের কার্য শুরু হবে। তাই শয়তান সেই অনন্তকালীন শাস্তি ভোগের পূর্বে পৃথিবীর সকলকে ঐ শান্তির কিছুটা শরীক করানোর প্রয়াসেই মগ্ন এবং বিভিন্ন মাধ্যমে কার্য সম্পাদন করে যাচ্ছে। তবে এর থেকে বেঁচে থাকার জন্য সৃষ্টিকর্তার স্মরণাপন্ন হওয়া আমাদের প্রত্যেকের একান্ত প্রয়োজন। বিশ্ববিখ্যায় জলজ্যান্ত শয়তানের দৃষ্টান্তগুলোকে আলাদা করুন এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই পবিত্র থাকার সুব্যবস্থাকে পাকাপোক্ত করুন। শুধু পবিত্রস্থানে গিয়ে কিছুক্ষণ সময় পবিত্র থাকবেন বা দলীয় অথবা সামাজিক সংযুক্তির অবস্থানেই পবিত্র থাকবেন তা কিন্তু নয় বরং জিবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই পবিত্রতাকে বিরাজমান রাখার চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। নির্জন বা জনসমাগমে অথবা দুনিয়ার দ্বারা নির্ধারিত সেইসকল পবিত্রস্থানগুতে পবিত্র থাকার অভ্যাসকে সাবজনীন করে সার্বক্ষণিক পবিত্রতা বিরাজমান রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। আসুন আমরা সকল অবস্থায় সকল স্থানেই নিজেদেরকে পবিত্র রাখি এবং সৃষ্টিকর্তাকে আমাদের স্ব স্ব দেহের ভিতরের অন্তরের অন্তস্থলে (সৃষ্টিকর্তাকে) বসবাসের ব্যবস্থা উন্মুক্ত করি। তিনি কোন ঘরে আবদ্ধ নন বরং তিনি আমার আপনার সকলের অন্তরে বসবাস করেন। তাই অন্তরকে পবিত্র করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখুন।
আমরা জানি অন্তর থেকে সকল খারাপির উৎপত্তি হয়; আর ঐ অন্তর থেকে উৎসরিত খারাপিই আমাদের মস্তিষ্কপ্রসুত হয়ে মুখ দিয়ে বের হয় এবং কায্যে পরিণত হয়। যার ফলশ্রুতীতে আমরা পাপে পতিত হয় এবং পাপে পতনের পরে আমাদের রূহানিক বা আধ্যাত্মিক/আত্মীক মৃত্যু হয় এবং তৎপরেই পাপের জন্ম হয়। আর ঐ পাপই আমাদের সৃষ্টিকর্তাবিমূখ করে যা তাঁর অবাধ্যতার ফসল হিসেবে বাবা আদম ও মা হাওয়ার মাধ্যমে দৃষ্টান্ত হিসেবে পৃথিবী আজ স্বীকৃত। আজ ঐ পাপসকলকে পরাজিত ও পরাভূত করে আগামীর শান্তি ও স্থীতিশীলতা, নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাসহ সকল ইতিবাচক আশা ও আকাঙ্খার নিম্মিত্ত্বে কল্যাণ সাধনে নিয়োজিত হউন। ’২১ সালের লিখা সর্বাত্মক উপদেশ, আদের্শ-নির্দেশ এবং বাস্তবতার সম্মুখ দৃশ্যমান করে বহুবিষয়ের অবলোকন করানোর প্রয়াস অব্যাহত রেখে এবং ঐ তুলে ধরায় আরো নিখুততা এবং নির্ভূলতা এমনকি প্রামানিক ও দালিলিক এবং যৌক্তিক এমনকি সকল কুমন্ত্রণা; ষঢ়যন্ত্র প্রকাশে অথবা এর থেকে মুক্তি বা রেহাই পাওয়ার ব্যবস্থা খোলা রেখে নতুন একটি সার্বজনীন ব্যবস্থা উন্মুক্ত করার দৃঢ় মনোবল অটুটে খোদার অভীপ্রায় ফলপ্রসুতা পাক।
আজ কোন বিষয়ে আলোচনা নয় এমনকি কোন দিকনির্দেনাও নয় বরং মুক্তভাবে বর্ষবরণে সম্পাদকীয়কে রাঙ্গানোই একমাত্র ইচ্ছা। তবে নতুন বছরে সকলের জন্য শুভকামনা এবং সকলের কল্যাণের জন্য মোনাজাত রেখে আগামীর দায়িত্বশীল আচরণ ও বহি:প্রকাশ ঘটানোর প্রচেষ্টা সর্বাত্মক অব্যাহত রাখার আশা ও ওয়াদা পোষণ করছি। সকলের মঙ্গল কামনা এবং উন্নতিরকল্পে নিজেকে সকল ক্ষেত্রে নিয়োজিত রাখব। খোদার দেয়া জ্ঞান ব্যবহারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব এই নিশ্চয়তাটুকু বছর শুরুর প্রথম প্রহরে ঘোষণা করছি। কেউ শত্রু নয় সকলেই বন্ধু এই মূলমন্ত্রে এগিয়ে যাওয়ার শতভাগ নিশ্চয়তা উন্মুক্ত করলাম। যতক্ষণ দেহে থাকবে প্রাণ ততক্ষণ আমার ওয়াদা রক্ষার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব; এতে যদি আমার প্রাণও যায় তাতেও পিছপা হবো না। আমার প্রাণ ত্যাগকে দৃষ্টান্ত বা স্বাক্ষ্য হিসেবে সকলের সামনে বিরাজমান রাখব। সবাই ভাল থাকুন, নতুন আশা, নতুন স্বপ্ন, নতুন ঠিকানা এবং নতুনের নতুনত্ব নিয়ে সুস্থ্য সবলভাবে বাঁচার অভয়ারণ্যে বিচরণ করুন। প্রশান্তির মাধ্যমে প্রশান্তি বিলিয়ে দেয়াই আমার জীবনের শেষ অভিপ্রায়ের ঠিকানা বা গন্তব্য হউক এই কামনা করে নতুন সম্ভাবনার আঙ্গিনায় দেখা হওয়ার আশা জিইয়ে রেখে সবাইকে শুভ নববর্ষ জানিয়ে বিদায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.